পাত পেড়ে খেয়ে ভুলে গিয়েছেন অমিত শাহ, বিভীষণের মেয়ের ওষুধের দায়িত্ব নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার

গরিব দরদী প্রমান করতে গিয়ে জেলায় জেলায় গিয়ে গরিব মানুষের বাড়িতে পাত পেড়ে খেতেন। প্রতিশ্রুতিও দিতেন।

Must read

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে একপ্রকার “ডেইলি পাসেঞ্জারি” শুরু করেছিলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গরিব দরদী প্রমান করতে গিয়ে জেলায় জেলায় গিয়ে গরিব মানুষের বাড়িতে পাত পেড়ে খেতেন। প্রতিশ্রুতিও দিতেন।

দিল্লি ফিরে সবকিছুই ভুলে যেতেন। এইবার অমিত শাহ কথা না রাখলেও, তার পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য প্রশাসন। বাঁকুড়ার জনমজুর বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে তাঁর মেয়ের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছে দিল রাজ্য সরকার। আগামীদিনেও নিয়মিত ওষুপধ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিলেন স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ।

আরও পড়ুন-স্কুল খুলছে, নিয়ম মানতে ২৮ পাতার পুস্তিকা

করুন পরিণতির খবর পাওয়ার পর বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে যান বিডিও এবং বিএমএইচ। তাঁর মেয়ের জন্য একমাসের ওষুধ ও ইনস্যুলিন ইঞ্জেকশান পরিবারের হাতে তুলে দেন। আশ্বাস দেওয়া হয়, আগামী দিনেও স্বাস্থ্য দফতর থেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাবেন বিভীষণ। অমিত শাহকে বাড়িতে বেশ জমিয়ে ভোজ খাইয়েছিলেন, কিন্তু বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ ফিরে তাকায়নি। রাজ্য প্রশাসন পাশে দাঁড়ানোয় খুশি বিভীষণ।

আরও পড়ুন-পারমাণবিক ঘড়ি দিয়ে মাপা হচ্ছে স্থানভেদে সময়ের বদলকে

এক বছর আগে বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জার ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আসা-খাওয়া-যাওয়া। যাওয়া-খাওয়া-আসা। প্রতিশ্রুতি দেওয়া। এবং জুমলার রঙ্গমঞ্চ নাটক মঞ্চস্থ করা।

২০২০ সালের ৫ নভেম্বর। বাংলায় হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের আগে তখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। বাঁকুড়ায় দলের কর্মসূচিতে নিত্যযাত্রী দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে বিতর্কিত মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও রাজনৈতিক সভা।

গরীব-তপসিলি জাতি-উপজাতিদের একচিলতে ঘরে গিয়ে পঞ্চব্যঞ্জন সহকারে খাওয়া। তারই অঙ্গ হিসেবে চতুরডিহি গ্রামে বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের বিরাট আয়োজন।

আরও পড়ুন-পারমাণবিক ঘড়ি দিয়ে মাপা হচ্ছে স্থানভেদে সময়ের বদলকে

সেদিন বিভীষণের ছোট্ট বাড়িতে ভোর থেকে সাজ সাজ রব। নিজে হাতে রেঁধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খাইয়েছিলেন স্ত্রী মনিকা হাঁসদা। দুপুরে খাওয়ার ফাঁকে কঠিন অসুখে ভুগতে থাকা মেয়ে রচনার চিকিৎসার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিলেন বিভীষণ। একগাল হাসি আশ্বাস দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দিল্লির এইমসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন!

এরপর স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারও বলেছিলেন বিষয়টি দেখে নেবেন। বিভীষিণের অভিযোগ, কেউ কথা রাখেনি। প্রতি মাসে মেয়ের চিকিৎসার জন্য খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। এক বছর পরেও মেয়ের কঠিন অসুখের চিকিৎসা চালাতে ভরসা বলতে বিভীষণ হাঁসদার জনমজুরির সামান্য উপার্জনই।

কোথায় এইমস? কোথায় অমিত শাহ? কোথায় বিজেপি সাংসদ? বিভীষণ বুঝেছে, দিল্লি এখন অনেক দূর। রাজ্যই ভরসা। ভরসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

 

Latest article