সুস্মিতা মণ্ডল ডায়মন্ডহারবার: আবারও রাজ্যে নজির গড়ল ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের এক তরুণীর শরীরে কৃত্রিমভাবে যোনি ও জরায়ু তৈরি করলেন এই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত চারজনের এই অস্ত্রোপচার হয়েছে। সব ক’টিই হয়েছে এই হাসপাতালেই এক বছরের মধ্যে। দিন পনেরো আগে বাংলাদেশের এক তরুণী হাসপাতালের আউটডোরে দেখাতে আসেন। ওই তরুণীর শরীরে যোনি ও জরায়ু ছিল না।
আরও পড়ুন-সাপের কামড়ের চিকিৎসায় ট্যাবলেট
পরিবারের লোকজন এটা জানতেন না। জিনগত কারণে মহিলা হিসেবেই বেড়ে উঠছিলেন তরুণী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে যেতেই সে সব খুলে জানায়। কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসার কোনও সুযোগ নেই। এক বছর আগের এরকম এক অস্ত্রোপচারের ভিডিও ইউ টিউবে ভাইরাল হয়। তরুণীর পরিবার সেই ভিডিও দেখে সেই সূত্র ধরে চলে আসে ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে। আউটডোরে দেখানোর পর স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগ অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগকে বলা হয় মুলেরিয়ান অ্যাজিনেসিস। জন্ম থেকেই যোনি ও জরায়ু থাকে না। পৃথিবীতে এই সমস্যা নিয়ে খুব কম মহিলা জন্মান। ডাক্তারি পরিভাষায় এই অস্ত্রোপচারকে বলা হয় ‘ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি’। স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান ডাঃ সোমজিতা চক্রবর্তী এই বিরল অস্ত্রোপচার নিয়ে গবেষণা করেছেন।
আরও পড়ুন-বন্ধ পাওয়ারলুম সরব তৃণমূল
তাঁর গবেষণাপত্র আর্ন্তজাতিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। চিকিৎসক দলের ডাঃ মানস সাহা জানান, ‘অতীতেও একই অস্ত্রোপচার এখানে হয়েছে। অস্ত্রোপচারে কিছু ঝুঁকি থাকে। তবে আমরা সব ক’টি অস্ত্রোপচারেই সাফল্য পেয়েছি। ওই তরুণীর যৌনজীবনেও সমস্যা হবে না। তবে মা হতে গেলে ওঁকে সারোগেসি করে গর্ভ ভাড়া নিতে হবে।’ সফল অস্ত্রোপচারের পর ওই তরুণী বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন। এখন সুস্থ বলে বাংলাদেশ থেকে ফোনে জানান। পরে চেকআপে আসবেন। অধ্যক্ষ ডাঃ উৎপল দাঁ বলেন, ‘চিকিৎসক, নার্স-সহ সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে এই সাফল্য। রাজ্যে উৎকর্ষ চিকিৎসাকেন্দ্র হিসাবে এই মেডিক্যাল কলেজ নজির গড়বে।’