প্রতিবেদন : বেসরকারি আয়োজকের ভুলে এবং অপরিণামদর্শিতায় যুবভারতীতে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে শনিবার দুপুরে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তদন্ত কমিটি গড়েছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটি যুভারতীতে। অন্যদিকে আয়োজক শতদ্রু দত্তকে বিধাননগর থানা কোর্টে পেশ করলে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যুবভারতীর ঘটনায় অকারণ কুৎসার পথে নেমেছে বিজেপি আর তার দোসর বামেরা। বিজেপি যে যুবভারতী কাণ্ডে ধুনো দিয়েছিল সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছে সেদিনের একাধিক চিত্র। মেসি আসবেন, ফুটবল খেলা হবে। সেখানে গেরুয়া পতাকা কেন আসবে? কেনই বা জয় শ্রীরাম স্লোগান উঠবে? আবার তাদের কেউ কেউ তো ডান্ডা দিয়ে মাঠের ফেন্সিংয়ের তালা ভাঙল। এ চিত্র দেখার পর নিশ্চয় অন্য কারণ খুঁজতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। গদ্দারের দল অঙ্ক কষে এই চক্রান্ত করেনি তো! এই অভিযোগ কিন্তু এড়িয়ে যেতে পারছে না আয়োজকরা।
আরও পড়ুন-১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত শতদ্রুর
যুবভারতীর ঘটনা তুলে বিজেপি বাংলার বদনাম করার খেলায় মেতেছে। বঙ্গ বিজেপির নেতারা শুধু শনিবারের যুবভারতীর উদাহরণ তোলার আগে নিজেদের রাজ্যগুলোর দিকে তাকান! উত্তরপ্রদেশে কুম্ভমেলা। আগুনে কতজনের মৃত্যু হয়েছিল? সরকারি মতে ৮২, বেসরকারি মতে মৃত শতাধিক। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আইপিএল চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু। ভুলে গেলেন? গুজরাতে রোজ সেতু ভেঙে পড়ছে। মৃত্যু হচ্ছে। মোরবি সেতু ভেঙে ১২৩ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর বাংলায় একটা ফুটবলের অনুষ্ঠানকে ঘিরে এত কথা কেন? কিছু লোকের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণে মাঠ উত্তপ্ত হয়েছে। মৃত্যু তো দূরের কথা, আহত একজন বা দু’জন। তাহলে? উদ্দেশ্য বাংলা সম্বন্ধে ভুল পারসেপশন তৈরি করা। মূল উদ্দেশ্য বাংলাকে কলঙ্কিত করা। এরা পাওনা না দিয়ে বাংলাকে বিপদে ফেলতে চায়। এরা বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এরা এসআইআরের নামে বিজেপি বিরোধী ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে চায়। যুবভারতীর ঘটনা নিয়ে বিজেপির দিল্লির মাস্টারদের যে হাত নেই, তা কি বলা যায়? তদন্ত করলেই আসল সত্যটা বেরিয়ে আসবে। ঘটনা হল, বেসরকারি সংস্থার এই অনুষ্ঠান যাতে যথাযথ হয়, তার জন্য ক্রীড়ামন্ত্রী বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে না এসে সব ঠিক আছে বলে অতি চালাকি করতে গিয়ে এই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে। রাজ্য তার কর্তব্য পালন করলেও সংস্থাটি নিজেদের বাণিজ্যের লক্ষ্যেই মত্ত ছিল। সেখানে কি দিল্লি বিজেপির সেই চক্রান্তকারীদের হাত ছিল? উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তদন্তের প্রয়োজন। ঘটনা কিন্তু সেরকমই ইঙ্গিত করছে।

