সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর : বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ফের সামশেরগঞ্জে শুরু হয় গঙ্গায় ভয়াবহ ভাঙন। উত্তর চাচন্ড গ্রামের এই নদীভাঙনে সকালেই নদীগর্ভে তলিয়ে যায় ২০টি বাড়ি। আরও ১০টি বাড়ি বিপজ্জনকভাবে নদীর উপর ঝুলে আছে। যে কোনও সময় সেগুলিও নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা। প্রসঙ্গত, প্রায় দু’বছর ধরে সামশেরগঞ্জ থানার ধানঘড়া, শিবপুর, চাচন্ড প্রভৃতি এলাকায় গঙ্গাভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে ভাঙন প্রতিরোধে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে এ বছর বর্ষাকাল দীর্ঘ হওয়ায় নদীতে জল বেশি থাকার জন্য ভাঙন প্রতিরোধের কাজ ভালভাবে করা সম্ভব হয়নি। ভাঙন কবলিত এলাকায় বালির বস্তা ফেলে সাময়িকভাবে প্রতিরোধের কাজ করে প্রশাসন।
আরও পড়ুন-হামাসের প্রস্তাব সটান উড়িয়ে দিল ইজরায়েল, পণবন্দিদের মুক্তির শর্তে ‘না’
চাচন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফিরদৌসি খাতুন বলেন, ‘উত্তর চাচন্ডে ভাঙন হতে পারে এমন পূর্বাভাস ছিল না। জনবসতি থেকে কয়েক হাত দূরে ছিল গঙ্গা। প্রায় তিন মাস আগে ওই এলাকায় শেষবার ভাঙন হয়। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামবাসীরা যখন ঘুমিয়ে ছিলেন তখন হঠাৎই গ্রামে সংলগ্ন নদীতে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। গ্রামবাসীরা ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার আগেই প্রায় ২০টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। আরও ১০টি বাড়ি যে কোনও সময় নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।’ গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিকুল শেখ বলেন, ‘২০২০ সালের ভয়াবহ ভাঙনে এই এলাকার সমস্ত চাষযোগ্য জমি নদীগর্ভে চলে যায়। গঙ্গা এখন জনবসতির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত ভাঙন বন্ধ না হলে গোটা একটি জনপদ নদীগর্ভে চলে যাবে।’ আর এক গ্রামবাসী সফি সুলতান বলেন, ‘দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে উত্তর চাচন্ডর প্রায় ২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’ গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, গঙ্গার জলস্তর নামার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর চাচন্ডয় নদীভাঙন আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।
আরও পড়ুন-আলোর বেণুর মূর্ছনায় বোলপুর
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ভাঙন শুরু হওয়ামাত্র উত্তর চাচন্ড গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছেন। নদীতীরের কাছাকাছি যে সব বাড়ি রয়েছে সেখানকার বাসিন্দারা বাড়ি ভেঙে ইট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সরে যেতে শুরু করেছেন।
ফিরদৌসি খাতুন বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ১০০ জন মানুষকে সিবিজে হাইস্কুলে স্থানান্তরিত করেছি। পঞ্চায়েতের তরফ থেকেই তাঁদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আমাদের এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন বৃহস্পতিবার থেকেই এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’