প্রতিবেদন : বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে দেউলিয়া কংগ্রেস এবার ধরল বিজেপির হাত৷ মঙ্গলবার সেই গড়াপেটা খেলার কুৎসিত নমুনা দেখা গেল লোকসভায়৷ কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরিকে নজিরবিহীনভাবে অনেকটা বেশি সময় বরাদ্দ করে দিয়ে বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে অনৈতিক আক্রমণের সুযোগ করে দিল বিজেপি৷ মোদি সরকারের সমর্থনে নিয়মবহির্ভূতভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে সরব হতে দেখা গেল বহরমপুরের সাংসদকে৷ লোকসভায় কংগ্রেস–বিজেপির এই যুগলবন্দিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, বাংলায় এই দুই দল এবং তাদের সঙ্গে বামেরা মিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মসূচিকে টেক্কা দিতে না পেরে রাজনৈতিক কুৎসায় নেমেছে৷ সংসদে অধীরের নাটকে তারই প্রতিচ্ছবি৷
আরও পড়ুন-মন্তব্য পিকের, তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বী নয় আপ
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়৷ তা নিয়ে সংসদে আলোচনা করা যায় না৷ তা সত্ত্বেও বিজেপির প্রত্যক্ষ সহায়তায় এদিন কংগ্রেস সাংসদ বলতে থাকেন, আমতার আনিস খানের মৃত্যু এবং ঝালদা ও পানিহাটির দুই কাউন্সিলরের মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে অধীর যখন সিবিআই তদন্তের দাবি করছেন, তখন টেবিল চাপড়ে তাতে সমর্থন দিতে দেখা যায় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে৷ তা সমর্থন করেন বিজেপি সাংসদরাও৷ অন্যদিকে প্রতিবাদ জানান তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা৷
আরও পড়ুন-কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা নিয়ে অভিষেকের প্রশ্নে নিরুত্তর কেন্দ্র
পরে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, কংগ্রেস নেতারা এখন সিবিআই তদন্তের দাবিতে টেবিল চাপড়াচ্ছেন! ভাল কথা৷ তাহলে চিদম্বরমের বাড়িতে যখন সিবিআই হানা দিয়েছিল এবং গান্ধী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করতে যায় তখন কেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কথা বলেন ওঁরা? নিজেদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করলে খারাপ, আর অন্য ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত ভাল০, এটা কোন যুক্তি? তৃণমূলের অভিযোগ, লোকসভার চিত্রনাট্য সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত৷ বাংলায় বিজেপি–কংগ্রেস–বামেদের যে অনৈতিক জোট, তা ফের স্পষ্ট সংসদের চিত্রনাট্যে৷ অধীর চৌধুরিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বলার সুযোগ করে দিয়েছে বিজেপি৷ বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে উন্নয়নের কর্মসূচিতে টেক্কা দিতে না পেরে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বিজেপি ও কংগ্রেস কুৎসার নাটকে নেমেছে৷
আরও পড়ুন-যুদ্ধের জেরে বড় ধাক্কা দেশের শেয়ার বাজারে
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, বামেরা ক্ষমতায় থাকার সময় ৫৫ হাজার বিরোধী কর্মী খুন হয়েছিলেন৷ বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে দাঙ্গা ও খুন–খারাপিতে বহু মৃত্যু হয়েছে৷ তখন সিবিআইয়ের কথা মনে পড়ে না? মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক রেকর্ড খতিয়ে দেখা হোক, কার বিরুদ্ধে ক’টা খুনের মামলা রয়েছে! বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যাঁরা অসত্য কথা বলে বিভ্রান্ত করছেন তাহলে তাঁদের স্বরূপ উন্মোচিত হবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ দোষীরা কেউ ছাড়া পাবে না৷ এ নিয়ে রাজনীতি করে লাভ নেই৷