নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ, বিলে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি প্রাক্তন কমিশনারদের

আসন্ন বিলের যে ধারায় নির্বাচন কমিশনারদের চাকরির শর্ত, বেতন, ভাতা ইত্যাদির উল্লেখ রয়েছে, সেটির উপর জোর দিচ্ছেন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা

Must read

প্রতিবেদন : সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। এই অধিবেশনেই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের নিয়ম বদল করতে বিল আনছে মোদি সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে সংসদে সংখ্যার জোরে বিল পাশ করিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করতে চায় মোদি সরকার। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি ঘনিষ্ঠ তাঁবেদার অফিসারদের এই পদে নিয়োগের পথ প্রশস্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি প্রস্তাবিত বিলের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।

আরও পড়ুন-ঘুষ নিতে গিয়ে সিবিআইয়ের জালে সরকারি কর্তা-সহ ৭

পাশাপাশি প্রস্তাবিত নতুন সিইসি বিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা। এই বিলের বিরোধিতায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি দিচ্ছেন তাঁরা। প্রস্তাবিত বিলে নির্বাচন কমিশনারদের পদমর্যাদা কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনারদের পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সমকক্ষ। আসন্ন বিলে পদের অবনমন করে তাঁদের ক্যাবিনেট সচিবের সমগোত্রীয় করার কথা বলা হয়েছে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে শুধুমাত্র কমিশনারদের মর্যাদাই কমবে না, একসঙ্গে নির্বাচন কমিশন নামক প্রতিষ্ঠানটিরও অবনমন হবে। অন্তত তিনজন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিলের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিতে চলেছেন।
আসন্ন বিলের যে ধারায় নির্বাচন কমিশনারদের চাকরির শর্ত, বেতন, ভাতা ইত্যাদির উল্লেখ রয়েছে, সেটির উপর জোর দিচ্ছেন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা।

আরও পড়ুন-বেনামে আদানির শেয়ারে বিনিয়োগ, মরিশাসে বাতিল লাইসেন্স

প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নতুন বিলটি ভারতের নির্বাচন কমিশনের এবং শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের মর্যাদাও কমিয়ে দেবে। নতুন নির্বাচন কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা হবে আমলাদের সমতুল্য, যা একজন প্রতিমন্ত্রীর চেয়ে কম। এ কারণে নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাঁদের অসুবিধা হবে। তাঁদের যে সম্মানের সঙ্গে দেখা হয় তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। কুরেশি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এই পরিবর্তন না করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।

আরও পড়ুন-ভারতের স্বাধীনতা ইতিহাসের অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি, বন্ধ হচ্ছে সেই ইন্ডিয়া ক্লাব

গত ১০ অগাস্ট বাদল অধিবেশনে বিলটি রাজ্যসভায় আনা হয়। যদিও সেটি বিস্তারিত আলোচনা ও পাশ করানো হয়নি। বিশেষ অধিবেশনে সেই বকেয়া প্রক্রিয়াটি সেরে ফেলতে চায় মোদি সরকার। এদিকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিলের সর্বাত্মক বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদীয় দলকে নির্দেশ দিয়েছেন এই ইস্যুতে সংসদের অধিবেশন উত্তাল করতে হবে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেও বিলটির বিরোধিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি দলের জাতীয় মুখপাত্র শামা মহম্মদ বলেছেন, ভারতের নির্বাচন প্রক্রিয়া সারা দেশের কাছে একটি অনুপ্রেরণা। বিজেপি সরকারের প্রস্তাবিত বিল ভারতের গণতন্ত্রের পক্ষে এমন একটি ঘাতক বা ধাক্কা, যার পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। নতুন বিল সম্পর্কে আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা বলেছেন, কোনও সন্দেহ নেই যে এখন থেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা আর ভাবা সম্ভব হবে না।

Latest article