প্রতিবেদন : একদা ঘনিষ্ঠ শুধু নন, তাঁর ডানহাত ও ছায়াসঙ্গী বলে পরিচিত ছিলেন, সেই আরমান ভোলাই (Suvendu Adhikari- Arman Bhola) এবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব অভিযোগ আনলেন। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নাম না করে তিনি (Suvendu Adhikari- Arman Bhola) পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, উনি পুরুষ পছন্দ করেন। মহিলাদের পছন্দ করেন না। অনেক কমবয়সি ছেলেদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছেন উনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ওঁর ব্যক্তিগত রাগ। বিজেপিতে গিয়ে তাই কুৎসা করছেন৷ আরও অনেক অজানা কাহিনি রয়েছে যা আরমান-সহ আরও অনেকেই বলতে চান। সঠিক সময়ে আইনের দ্বারস্থ হয়ে সবটাই তাঁরা আদালতের হাতে তুলে দিতে চান। শুভেন্দুর একদা-ঘনিষ্ঠ আরমান ভোলার বিস্ফোরক মন্তব্যের পর হইচই পড়ে গিয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। বিজেপির অন্দরেও তোলপাড় শুরু হয়েছে।
২০২০-তে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দাদার অনুগামী বলে যেসব পোস্টার পড়েছিল সেসব তাঁরাই লাগিয়েছিলেন বলে এদিন জানিয়েছেন আরমান ও তাঁর সঙ্গী যুবকরা। ২০০৩ সাল থেকে শুভেন্দুর সঙ্গে আছেন বলে আরমানের বিস্ফোরক অভিযোগ, ওনার সঙ্গে অনেক বছর আছি, কী কী কুকীর্তি করেছেন তার সবটাই জানি। উনি মালদা, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে ছেলে এনে নিজের কাছে রাখতেন। তাদের দিয়ে গা-হাত-পা টেপাতেন। ছেলেদের মাথা ন্যাড়া করে দিতেন। আরও অনেক কিছুই করতেন তাদের সঙ্গে, সবটা এখন বলছি না। ওনার পুরুষ-স্পর্শ পছন্দ। আপাতত এর বেশি কিছু বলব না। ঠিক সময়মতো তথ্য-প্রমাণ সমেত জানাব। এবার আপনারা যা বোঝার বুঝে নিন। স্পষ্ট বক্তব্য আরমানের।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে শুভেন্দুর ব্যক্তিগত রাগ, সে-কথাও এদিন প্রকাশ্যে এনে আরমান বলেন, উনি একাধিকবার আমাদের বলেছেন, আমি অভিষেককে বাংলার রাজনীতিতে মাথা তুলতে দেব না। তার জন্য যা করতে হয় করব। যতদূর যেতে হয় যাব। এরপরেই আরমানের সংযোজন, ওনার এই ব্যক্তিগত আক্রোশের জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা জেলার মানুষ শান্তি চাই, অশান্তি চাই না। কিন্তু উনি অশান্তি চাইছেন। উনি নিজের ছাড়া কোনওদিন কারও ভাল চাননি।
আরও পড়ুন-বিজেপির নোংরামির বিরুদ্ধে বিধানসভায় শাসক দলের মিছিল
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে আমাদের শাসিয়ে উনি বলেছিলেন, বিজেপির সরকার ক্ষমতায় আসছে, এ-রাজ্যে ৭০০ এনকাউন্টার হবে। তার তালিকাও তৈরি হয়ে গেছে। আমার সঙ্গে না থাকলে তোদেরও যে-কোনওদিন এনকাউন্টার হয়ে যেতে পারে, এদিন এই ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেছেন আরমান। তাঁর কথায়, তখন ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। বললে ক্ষতি হয়ে যেত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমার আবেদন, আমি ও আমার মতো বহু যুবক ওঁর সব কুকীর্তি বলতে চাই, আইনের কাছেও সব তথ্যপ্রমাণ দিতে চাই। আমাদের আশ্রয় দিন। আরমানের কথায়, নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর পা ভাঙার দিন বাইরে থেকে প্রচুর ছেলে আনা হয়েছিল। আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে, সব বলব। শুভেন্দু নিজেকে অকৃতদার বলে কেন? এই প্রশ্ন করায় আরমানের জবাব, উনি মহিলাদের বিয়ে করতে পারবেন না। উনি তো শুধু পুরুষ পছন্দ করেন। বিয়ে করবেন কী করে! উনি যেভাবে চলছেন তাতে রাজ্যে অশান্তি বাড়বে। তাই আমরা ওঁর কাছ থেকে সরে এসেছি। আরও অনেক কিছু আছে সব ফাঁস করব। বৃহস্পতিবার আরমান ছাড়াও সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিজয় মাকড়, বিশ্বজিৎ পাত্র, নুরুল ইসলাম ও অরুণাভ কুইতি।