প্রতিবেদন : সেনাদের নিয়ে ভোটে জেতার রাজনীতি হয়, অথচ অন্য সময় সেনারা যখন দেশ বাঁচাতে জীবন বলি দেন তখন সেদিকে মন দেওয়ার সময় নেই! একদিকে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জম্মু-কাশ্মীরে একের পর এক শহিদ (Soldiers Killed) হচ্ছেন দেশের বীর জওয়ানরা, অন্যদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জি-২০’র জয়ঢাক পেটাচ্ছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর এই আচরণকে চূড়ান্ত অসংবেদনশীল বলে তোপ দাগল বিরোধীরা। বিজেপির পাশাপাশি মোদির তীব্র সমালোচনা করে বিরোধীদের তরফে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, যাই ঘটুক না কেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রশংসা গ্রহণ থামাতে পারেন না।
বুধবার, জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট হুমায়ুন ভাট সহ দুই সেনা কর্মকর্তা কর্নেল মনপ্রীত সিং এবং মেজর আশিস ধোনাক নিহত হয়েছেন। এমন একটি দিনে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সাফল্য ‘উদযাপন’ করা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে। যেখানে উপস্থিত খোদ নরেন্দ্র মোদি। এই ঘটনায় বিজেপির সমালোচনা করে তোপ দেগেছেন বিরোধী নেতারা।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, অনেক হয়েছে। এটাই সেরা সময় মোদিজির দ্বিচারিতা তুলে ধরার। উৎসব বন্ধ করুন, যখন আমাদের বীর যোদ্ধারা প্রাণ হারাচ্ছেন। দেশ বিজেপির ছদ্ম জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান করছে৷ বিজেপি, দেশের সেনার (Soldiers Killed) সার্ভিসকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে৷ কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, যখন তিনজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হওয়ার খবর আসছে, তখন বাদশার জন্য উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছিল। পাশাপাশি একজন মৃত সৈনিকের পরিবারের সদস্যদের শোকের ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে কংগ্রেসের অফিসিয়াল পেজে প্রধানমন্ত্রীকে ‘অসংবেদনশীল’ বলা হয়েছে। শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, যেদিন নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ভয়ানক লড়াই করছিল সেদিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর আরও সংবেদনশীলতা আশা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত জানানোর ভিডিও শেয়ার করে এক্স-হ্যান্ডেলে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, এটি স্থগিত করা যেতে পারত, আরও সংবেদনশীলতা প্রত্যাশিত, বিশেষ করে এমন দিনে যখন আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে ভয়ানক লড়াই করছেন, জীবন দিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা মনোজ ঝা প্রধানমন্ত্রী মোদির সাফল্য অনুষ্ঠানের জন্য বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, দেশের মানুষ দুটি ভিডিও একসঙ্গে দেখছিল… পুলওয়ামা হামলার সময় ওরা বলেছিল ওরা দেরিতে জানতে পেরেছে… কিন্তু এবার তারা সকাল থেকেই সবকিছু জানত। তারপরও ক্ষমতাসীন দল এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেদের সাফল্য উদযাপনের উৎসব পালন করছিলেন। কারণ ভোটের আগে সেনাদের নিয়ে রাজনীতি করতেই অভ্যস্ত ওরা।