২০২৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয়ী হলেন হাঙ্গেরিয়ান (Hungarian) ঔপন্যাসিক লাজসলো ক্রাসনাহোরকাই। আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের এক প্রধান ব্যক্তিত্ব লাজসলো। তাঁর অভিনব শৈলী ও দার্শনিক গভীরতা তাঁর সাহিত্য অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। তাঁকে ফ্রানজ্ কাফকা এবং স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বজুড়েই সন্ত্রাস ও আতঙ্কের আবহে তাঁর শিল্পসত্তা ফুটে ওঠে তাঁর লেখায়। তাই তাঁর সাহিত্য যুদ্ধবিধ্বস্ত বছরে নির্দ্বিধায় নিজের জায়গা করে নিয়েছে।
আরও পড়ুন-এয়ারফোর্স দিবসে পাকিস্তানকে ‘রোস্ট’ ভারতের
২০১৪ সালে লাসলো তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকারে সম্মানিত হন। এই পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে অনেকটাই গাম্ভীর্যপূর্ণ করে তুলেছে। তাঁর সাহিত্যের বা উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু ধ্বংসের অনিবার্যতা, মানবতার অবক্ষয়, এবং আধুনিক জীবনের মানুষের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে এক ধরণের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা স্পষ্ট। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ তাঁর প্রথম এবং অন্যতম বিখ্যাত উপন্যাস। একটি কৃষি সমবায় গ্রামীণ জীবনকে তুলে ধরে এই উপন্যাস রচনা করা হয়। সেখানে এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমন এক ধরণের বিভ্রম ও আশা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিসট্যান্স’ উপন্যাসে হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরে একটি বিশাল হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, উন্মাদনা এবং একনায়কতন্ত্রের ছবি তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন-মোডেম নিয়ে পালিয়ে বিপাকে বরাহনগরে সোনার দোকানে খুন-ডাকাতির অভিযুক্তরা
প্রসঙ্গত, লাজলো ক্রাজনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘সটানটাঙ্গো’। ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ উপন্যাসের কথা যদিও নোবেল কমিটি আলাদা করে চিহ্নিত করছে। এই উপন্যাসে হাঙ্গেরির সামাজিক অস্থিরতা ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। সবমিলিয়ে এটি একটি ‘দুর্দান্ত সমসাময়িক জার্মান উপন্যাস’। ২০০৩ সালের প্রকাশিত তাঁর লেখা উপন্যাস ‘এ মাউন্টেন টু দ্য নর্থ, ও লেক টু দ্য সাউথ, পাথস টু দ্য ওয়েস্ট, এ রিভার টু দ্য ইস্ট’ বেশ উল্লেখযোগ্য। ২০০৮ সালে লাজলোর ১৭টি গল্পের সংকলন ‘সিয়োবো দেয়ার বিলো’ প্রকাশিত হয়েছে। লাসলোর অন্যতম বিখ্যাত উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ নতুন করে ভাবিয়েছে পাঠকদের।