গড়িয়া মহাশ্মশানের শতাব্দীপ্রাচীন পুজোয় অসমের কামাখ্যা মন্দির

প্রায় ১৮০০ বছরের প্রাচীন গড়িয়া মহাশ্মশান। একসময় এই শ্মশানের গা-ঘেঁষেই ছিল আদিগঙ্গা, বর্তমানে যা পরিচিত টালিনালা নামে।

Must read

প্রতিবেদন : প্রায় ১৮০০ বছরের প্রাচীন গড়িয়া মহাশ্মশান। একসময় এই শ্মশানের গা-ঘেঁষেই ছিল আদিগঙ্গা, বর্তমানে যা পরিচিত টালিনালা নামে। মঙ্গলকাব্যে কথিত আছে, এই আদিগঙ্গা ধরেই চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্য তরীগুলো সমুদ্রে পৌঁছত। আর মনসামঙ্গল কাব্যের ধনপতি সওদাগরের ছেলে শ্রীমন্ত সওদাগর সেই আদিগঙ্গার ধারেই গড়িয়া আদি মহাশ্মশান ও জোড়া শিব ও কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দিরের সূত্র ধরেই ১২১ বছর আগে এই মহাশ্মশানে কালীপুজো শুরু হয়। সোমবার বিকেলে স্থানীয় কাউন্সিলর সন্দীপ দাসের উদ্যোগে সেই পুজোর উদ্বোধন করলেন টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন টালিগঞ্জ ও যাদবপুরের অন্য পুর-প্রতিনিধিরাও। এবছর মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পরিকল্পনায় মণ্ডপে অসমের কামাখ্যা মন্দিরের আদল ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী নারায়ন নন্দী। শ্মশান চত্বরের মণ্ডপেই উঠে এসেছে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা কামাখ্যা মন্দিরের স্থাপত্যগুলো। গড়িয়া মহাশ্মশানের সেই পুজো দেখতে সোমবার দীপাবলির রাতে মানুষের ঢল নেমেছে। রবিবার উত্তরাখণ্ডের অঘোরী সাধুদের নৃত্য পরিবেশিত হয়েছে। মঙ্গলবার রয়েছে গৌতম দাসের বাউল সঙ্গীতানুষ্ঠান। বুধবারও রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার মহাভোগ বিতরণ।

আরও পড়ুন-শব্দ নয় নীরবতা চাই, শিল্পীর তুলির টানে নিঃশব্দ প্রতিবাদ

বাম জমানায় গড়িয়ার এই ঐতিহ্যবাহী মহাশ্মাশানের পাশ দিয়ে যেতেই গা-ছমছম করত! সমাজবিরোধী ও নেশাখোরদের মোচ্ছবের জায়গা ছিল এই শতাব্দীপ্রাচীন পবিত্রস্থল। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বালাই ছিল না। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকেই স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পরিকল্পনায় বদলে গিয়েছে শ্মশানের চেহারা। কাউন্সিলর সন্দীপ দাসের কথায়, কালের নিয়মে শ্রীমন্ত সওদাগরের তৈরি জোড়ামন্দির ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। গ্রেড-ওয়ান এই হেরিটেজকে নিয়ম মেনে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন মন্ত্রী। শ্মশানে আগে একজোড়া চুল্লি ছিল। এখন দু’জোড়া। শবযাত্রীদের সুবিধার জন্য অত্যাধুনিক শীততাপনিয়ন্ত্রিত প্রতীক্ষালয়, মডেল শৌচালয়, কার পার্কিং লট হয়েছে। আদিগঙ্গা দূরে সরে যাওয়ায় শ্মশান লাগোয়া জলাশয়েই অস্থি বিসর্জন হত। কিন্তু বদ্ধ বলে তাতে দূষণ বাড়ছিল। তাই জলাশয়টি বাঁধিয়ে ফোয়ারা লাগিয়ে ভোল বদলানো হয়েছে। এই শ্মশানে এখন বাচ্চারাও আসতে ভয় পাবে না।

Latest article