অসমের খনিতে নিষিদ্ধভাবেই জমিয়ে কয়লা উত্তোলনের কাজ চলছিল। সোমবার সেই অবৈধ ‘ইঁদুর-গর্ত’ (র্যাট হোল মাইন) খনিতেই হঠাৎ ঢুকে পড়ল জল। এর ফলে ভিতরে আটকে পড়লেন প্রায় ১৮ জন শ্রমিক। ৩০০ ফুট গভীর ওই কয়লাখনিটি দিমা হাসাও জেলার প্রত্যন্ত শিল্পশহর উমরাংসোতে রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় অবৈধ ওই খনির প্রায় ১০০ ফুট পর্যন্ত জল ঢুকে গিয়েছে। সেই খনিতেই আটকে পড়েছেন অন্তত ১৮ জন শ্রমিক।
আরও পড়ুন-আইআইএমের হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত ছাত্র
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ। প্রাথমিক ভাবে দু’টি মোটর পাম্প ব্যবহার করে জল তোলার চেষ্টা চলছে। এরপর খনি থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভারতীয় সেনাবাহিনী আসামের দিমা হাসাও জেলার উমরাংশু এলাকায় আটকে পড়া কয়লা খনি শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছিল। তবে খনির ভিতরে ঠিক কতজন আটকে রয়েছেন সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তাঁরা এই মুহূর্তে কী অবস্থায় রয়েছেন, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। ডিমাপুর-ভিত্তিক কর্পস সদর দফতরের প্রধান, আসাম রাইফেলসের মহাপরিদর্শক (পূর্ব) এবং PARA ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি হেলিকপ্টার এই অভিযান পরিচালনা করছে। আজ সকাল ৬.৩০ টায়, ৩২ আসাম রাইফেলস পাথফাইন্ডার ইউনিটের প্রথম দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তাদের প্রাথমিক কাজ ছিল পরিস্থিতির প্রাথমিক মূল্যায়ন করা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া। পরিস্থিতির জটিলতা এবং বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা বুঝে ভারতীয় সেনাবাহিনী সহায়তার জন্য একজন ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসারের অধীনে একটি ইঞ্জিনিয়ার টাস্ক ফোর্স (ETF) নিয়োগ করে।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে ন্যক্কারজনক ঘটনা, মর্গে টেনে হিঁচড়ে নেওয়া হচ্ছে মৃতদেহ
প্রসঙ্গত, বহুকাল আগে খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে র্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। শাবল-গাঁইতি দিয়ে খুব সরু গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে শ্রমিকদের এগোতে হত। এই প্রক্রিয়া রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনও মুহূর্তে ধস নেমে শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে। ২০১৮ সালে মেঘালয়ের এক অবাধ কয়লাখনিতে জল ঢুকে মৃত্যু হয়েছিল ১৫ জন শ্রমিকের। সেই ঘটনায় মাত্র দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল। বারংবার দুর্ঘটনার ফলে ‘র্যাট-হোল মাইনিং’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রশাসন। কিছুদিন আগে রাজস্থানে কুয়োয় পড়ে যাওয়া তিন বছরের শিশুকে উদ্ধারেও শেষ পর্যন্ত সেই ইঁদুর-গর্ত খননকারীদের ডেকে পাঠানো হয়।