সংবাদদাতা, দিঘা : তিনি জগতের নাথ জগন্নাথ। সমুদ্রপাড়ে তাঁর আগমনকে কেন্দ্র করে সাজ-সাজ রব গোটা রাজ্য জুড়ে। দিঘাতেও চলছে তার চূড়ান্ত প্রস্তুতি। শনিবার দুপুর হতেই প্রভু জগন্নাথের আগমনকে ঘিরে মন্দির চত্বরে বেজে উঠল মাঙ্গলিক সানাইয়ের সুর। জগন্নাথধাম থেকে ওল্ড দিঘা পর্যন্ত গাছে গাছে ইতিমধ্যে টাঙানো হয়েছে কয়েকশো মাইক। সেখানেই মাঙ্গলিক সানাইয়ের সুরের মূর্ছনার পাশাপাশি বেজে উঠছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সঙ্গীতও।
আরও পড়ুন-বিস্ফোরণে উড়ে গেল সেনাট্রাক, বালুচ বিদ্রোহীদের হামলায় খতম ১০ পাকসেনা
জগন্নাথের আগমন যে শিয়রে তা যেন আগাম জানান দিল সানাইয়ের সুরেলা ধ্বনি। বৃহস্পতিবার থেকে প্রায় ১ কোটি মন্ত্রে জগন্নাথধামের যাবতীয় যজ্ঞ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় চলে গ্রহ-নক্ষত্র পুজো এবং শান্তিযজ্ঞ। সকালে মন্দিরের ভিতরে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই পর্ব। বিকেল থেকে ফের শুরু হয় শান্তিযজ্ঞ। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্দিরের যাবতীয় আচারবিধি পালনের জন্য পুরীর রাজেশ দৈত্যাপতি ও ইসকন কর্তা রাধারমণ দাসকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেইমতো তাঁরা দাঁড়িয়ে থেকেই পরিচালনা করেছেন যাবতীয় যজ্ঞপর্ব। গোটা দিঘা রঙিন আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠেছে চন্দননগর থেকে আনা রংবাহারি আলোয়। জগন্নাথ থেকে গৌরাঙ্গের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রঙিন আলোয়। মন্দিরের সামনেও গাছে গাছে রঙিন আলো। যেহেতু উদ্বোধনের বাকি হাতেগোনা ক’টা দিন তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মন্দিরের সামনে চলছে চৈতন্যদ্বার নির্মাণকাজ। শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় মন্দির পরিদর্শনে আসেন প্রশাসন কর্তারা। যজ্ঞস্থলও ঘুরে দেখেন তাঁরা। ২৯ তারিখ পর্যন্ত চলবে যজ্ঞপর্ব। সেদিন শেষ দফার যজ্ঞের পর প্রভু জগন্নাথকে ফুলের বিছানায় শয়ানে পাঠানো হবে। প্রভু জগন্নাথের আগমনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিষ্টান্ন অর্পণ করা হবে। এরপর ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন হবে প্রভুর অভিষেক ও প্রাণপ্রতিষ্ঠা। নতুন বস্ত্রে সাজবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। সেদিন দুপুর থেকেই দেওয়া হবে ৫৬ ভোগ। এই মন্দিরে ভোগ অর্পণ হবে সকাল, দুপুর এবং সন্ধ্যায়। ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমন দাস জানান, ইসকনের বিভিন্ন শাখার প্রায় ৬০ জন ভক্ত এসেছেন এই মন্দিরে। তাঁরা মাঙ্গলিক কাজে হাত লাগিয়েছেন। এত বড় মন্দির হয়েছে যে চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।