প্রতিবেদন : একটা সময় লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসানসোলবাসীর কাছে আবেদন করেছিলেন, “বাবুল সুপ্রিয়কে জেতান। আমার মন্ত্রিসভায় বাবুলকে চাই!” আসানসোলবাসী মোদির সেই আবদার রেখেছিলেন। বাবুল সুপ্রিয়কে জিতিয়ে ছিলেন। মোদিও তাঁর মন্ত্রিসভায় বাবুলকে জায়গা দিয়েছিলেন। তবে পূর্ণ নয়, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। তাতেও খুশি ছিলেন বাবুল তাঁর ভোটাররা।
কিন্তু মাসকয়েক আগে কেন্দ্রের মন্ত্রিত্ব যাওয়ার পর থেকে বেসুরো ছিলেন বাবুল। সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্টে বাবুল রাজনীতি ছাড়ার ইঙ্গিত দেন। তাঁর মান ভাঙাতে অমিত শাহ-জেপি নাড্ডার মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা আসরে নামেন। কিন্তু শনিবারের বারবেলায় বাবুল বিজেপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যোগ দেন তৃণমূলে।
আরও পড়ুন :জ্বর রুখতে তৎপর স্বাস্থ্য দফতর
কিন্তু কেন? রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার ঠিক ৭ সপ্তাহ পরেই বাবুল যোগ দিলেন সেই দলে যে দল ও দলনেত্রীর বিরোধিতা করেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তাঁর উল্কার গতিতে উত্থান। তৃণমূলে যোগদানের যৌক্তিকতা নিয়ে বাবুল জানিয়েছেন, তিনি বেঞ্চে বসতে ভালো বসেন না। যে দল তাঁকে প্রথম এগারোয় সুযোগ দেবে তিনি সেই ক্লাবে খেলবেন। প্রথমবার আসানসোল থেকে যখন তিনি যেতেন তখন অনেকেই মনে করেছিলেন গায়ক হিসেবে সুনাম থাকায় তিনি জিতেছেন কিন্তু আসানসোল থেকে দ্বিতীয়বার বেশি ভোটে জিতে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে মানুষের জন্য কাজ করলে ভোটে জেতা কোনও কঠিন বিষয় নয়। এই ৭ বছরের সাংসদ জীবনে তিনি মাঠে ময়দানে থেকে লড়াই করেছেন। মানুষের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু বিজেপি সেই কাজের জন্য তাঁকে সম্মান বা মর্যাদা দেয়নি। তাই এমন সিদ্ধান্ত। যেখানে তৃণমূল তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়েছে। তাঁকে বাংলার জন্য কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে।
বাবুল তাঁর ৭ বছরের সক্রিয় রাজনীতি ও মানুষের ভোটে সাংসদ হওয়ার সঞ্চিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য আরও বেশি মাত্রায় কাজ করার সুযোগ পাবেন এই আশ্বাস তিনি পেয়েছেন তৃণমূলের থেকে। তাই রাজনীতি ছাড়বেন ভেবেও ফিরে এসেছেন রাজনীতির ময়দানে। নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ফিরেছেন তিনি। এবং তৃণমূলে যোগদানের পর সেটা প্রমাণ করতেই বদ্ধ পরিকর তিনি।
আরও পড়ুন :ইভিএম নিয়ে ভোট প্রচার
বাংলার মাটিতেই তিনি রাজনীতি করবেন এবং বাস্তবের রুক্ষ জমিতে দাঁড়িয়েই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এও জানান সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি যা লিখেছেন তিনি এখও তাই মনে করেন এবং মন্ত্রিত্বের জন্য তিনি পদত্যাগ করেননি। বিজেপি তাঁর উপর ভরসা রাখতে পারেনি। কিন্তু তৃণমূল তাঁকে সেই কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে।
রাজনীতিতে তাঁর নতুন ইনিংস শুরু করার পথে বাবুল জোরের সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি টাকা বা কোনও প্রলোভনে পড়ে রাজনীতি করতে আসেননি। তিনি এসেছেন মানুষের কাজ করার জন্য। বাংলার মানুষের কাজ করার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেছেন এবং কাজের সুযোগ দিয়েছেন।