সুনীতা সিং, বর্ধমান: রবি ও সোম, দুই দিন ধরেই চলছে সরস্বতীপুজো। সোমবার সকালে গোটা রাজ্যে সংস্কৃত মন্ত্র উচ্চারণ করে সবাই যখন পুষ্পাঞ্জলি দিচ্ছেন, তখন ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটল বর্ধমানের মসাগ্রাম সারদা মিশন শিক্ষণ মন্দিরে। বাগদেবীর পুজো হল সংস্কৃতে নয়, বাংলা মন্ত্রে। শিক্ষাবিদ ড. পবিত্র সরকার উপস্থিত থেকে এই সাহসী পদক্ষেপকে প্রশংসা করে বললেন, সংস্কৃত মন্ত্রকে উচ্চারণ করলেও তার মানে অনেকেই বোঝে না। যেহেতু পুজো-অর্চনার সঙ্গে ভাবের গুরুত্ব, তাই শব্দার্থ বোঝাও দরকার। এতদিন যা হয়নি মসাগ্রামের সারদা মিশন শিক্ষণ মন্দির সেই কাজ করল মারুত কাশ্যপকে দিয়ে। যিনি এই স্কুলের বাংলার শিক্ষক এবং নামী কবি।
আরও পড়ুন-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর উসকানির অডিও নিয়ে দ্রুত ফরেনসিক রিপোর্ট চাইল সুপ্রিম কোর্ট
সেই সূত্রেই পুষ্পাঞ্জলিতে শোনা গেল— ‘হে শুভকাল, তোমাকে প্রণাম/ প্রতিদিন সরস্বতী তোমাকে প্রণামে/বেদ-বেদান্ত-বেদাঙ্গ জ্ঞানের আধারে/ এই চন্দন, বেলপাতা পুষ্পাঞ্জলি ভরে/ কালি ও কলম সাথে সরস্বতী তোমাকে প্রণাম।’ ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক, শিক্ষাকর্মীরা সমবেতভাবে উচ্চারণ করলেন ‘জয় জয় দেবী চরাচর সারে’-র পরিবর্তে ‘হে দেবী, তুমি কুন্দফুলের চাঁদের আলো/ বরফ-সাদা গলার হারে কি ঝলকালো? বসে আছো পদ্মফুলে/ সুন্দর বাহুমূলে/ রয়েছ বীণা ধরে, অঙ্গে শুভ্র শাড়ি/ ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব আরও দেবতারই/ প্রিয় দেবী। আমাকে রক্ষা করো/ জড়তা মুক্ত করো,/ ও দেবী সরস্বতী।/ কৃষ্ণের প্রিয়তমা, শুভ্র সরস্বতী/ জিহ্বায় বসত গড়ো।’ বাংলায় অঞ্জলি দিতে পেরে খুশি পড়ুয়ারাও।
এদিন বাংলায় প্রথম সরস্বতী মন্ত্রের এই বইটিরও আনুষ্ঠানিক প্রকাশও হয়। আগামী দিনে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো থেকে বিয়ের মন্ত্রেরও বাংলায় প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে এদিন জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।