প্রেমে বাধা-অপমানের প্রতিশোধ! বৈদ্যবাটির যুগলকে খুন বোনের প্রেমিকের

Must read

খুনই করা হয়েছে বৈদ্যবাটির (Baidyabati Murder) যুগলকে। রহস্যমৃত্যুর কিনারা করে জানাল পুলিশ। ঘটনায় ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, প্রেমে বাধা পেয়েই প্রেমিকার দিদি ও তাঁর লিভিং পার্টনারকে খুন করেন অর্জুন পাশোয়ান।

৩৫ বছরের মণীশ ভাদুড়ি ও ৩২ বছরের অপর্ণা মাঝি বৈদ্যবাটির (Baidyabati Murder) ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার একটি বাড়িতে গত ছ-বছর ধরে ভাড়া থাকতেন। অপর্ণা প্রথম স্বামীকে ছেড়ে মনীশের সঙ্গে থাকতেন। স্থানীয়রা জানান, রাত তিনটে নাগাদ চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। বাড়িতে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনে পড়ে আছেন। একজন ঘরের মধ্যে এবং অন্যজন ঘরের বাইরে। যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। রাজার বাগানে মণীশের বাড়ির লোককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে যুগলকে উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।

অপর্ণার ছোটো বোন রিম্পার সঙ্গে একটি পানশালায় আলাপ হয় হাওড়া চামরাইলের বাসিন্দা গাড়ি চালক অর্জুন পাশোয়ানের। রিম্পা স্বামীকে ছেড়ে অর্জুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়। রিম্পার বড়দি তাঁদের দুজনকে তেলেঙ্গানায় কাজের ব্যবস্থা করে দেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পরে আবার তাণরা ফিরে আসেন। বিভিন্ন বিনোদন পার্কে দুজনে ঘুরতেও যান। মাস তিনেক তাঁরা মেলামেশা করার পর রিম্পা জানান তাঁর আর অর্জুনকে পছন্দ না। আরেকজনের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয়। রিম্পার দিদি অপর্ণা তাঁর বোনের সঙ্গে অর্জুনকে মেলামেশা করতে বারণ করেন। বোনকে ভালো জায়গায় বিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন।

আরও পড়ুন- ৩১,৫৮০ কোটি টাকার ঋণ-অনিয়ম ফাঁস হল, অভিযোগে বিদ্ধ রিলায়েন্স

নাছোরবান্দা অর্জুন বারন শোনেন না। অপর্নার বাড়িতে গিয়ে তাঁদের হুমকি দিয়ে যান। অর্জুনকে সঙ্গ দেয় তাঁর জামাইবাবু নাসিরুদ্দিন শেখ। ঘটনার তিনদিন আগে আবার বৈদ্যবাটিতে আসেন অর্জুন। সেখানে বচসা হয়। প্রকাশ্যে অপর্ণা তাঁকে চড় থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। এই অপমানের বদলা নিতেই সম্ভবত খুনের পরিকল্পনা করেন অর্জুন।

ঘটনার দিন অর্থাৎ বুধবার শিয়ালদহ থেকে ছুরি কিনে বৈদ্যবাটিতে যান অর্জুন। রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকে। ভোররাতে অপর্ণার ঘরে ঢোকেন। ঘুমন্ত অবস্থায় অপর্ণা ও মণীশের উপরে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফালাফালা করে দেন। রাত তিনটে নাগাদ প্রতিবেশীরা বাঁচাও-বাঁচাও চিৎকার শুনতে পান। ঘটনা পরেই গা ঢাকা দেন অর্জুন।

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি, ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাস বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত শুরু করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। মৃত অপর্ণার পরিবার, তাঁর মা-বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ অর্জুনের কথা জানতে পারে। অর্জুন আর নাসিরুদ্দিন যে তাঁদের হুমকি দিত একথাও জানা যায়।

এরপরই পুলিশ ওই দুজনকে ধরার ফাঁদ পাতে। দুটো টিম তৈরি করে একটি জগদীশপুর তদন্ত কেন্দ্রের অন্তর্গত চামরাইলে পাঠায় অপরটি যায় মহেশতলায়। স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

Latest article