প্রতিবেদন : শুধুমাত্র তথ্যের ভিত্তিতে নয়, জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের বিবেক এবং বলিষ্ঠ উপলব্ধিকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ, তথ্যই সবসময় শেষ কথা বলে না। জামিন নামঞ্জুর নয়, জামিন দেওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছে সংবিধান। বিচারপতি এবং বিচারকদের প্রতি এই বার্তা দিলেন প্রধান বিচারপতি। আসলে বিচার প্রক্রিয়ার একটি কঠিন বাস্তবকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের জামিন না দেওয়ার প্রবণতা নিয়েও। রবিবার এক অনুষ্ঠানে ভাষণপ্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, অপরাধমূলক ঘটনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে জামিন দেওয়ার ব্যাপারে দায়রা বিচারকরা ঝুঁকি নিতে চান না। সন্দেহের কোনও অবকাশ থাকলেই জামিন মঞ্জুর না করে নির্বিঘ্নে থাকতে পছন্দ করেন তাঁরা। প্রতিটি মামলার মোদ্দা কথাটা উপলব্ধি করার মতো বলিষ্ঠতার উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেন প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ২৮-এর প্রস্তুতিতে এবার নতুন পোস্টার-গান তৃণমূল ছাত্রদের
বার্কলে সেন্টার অন কমপ্যারেটিভ ইকুয়ালিটি অ্যান্ড অ্যান্টি ডিসক্রিমিনেশন-এর ১১ তম বার্ষিক সম্মেলনে এদিন ভাষণ দেন প্রধান বিচারপতি। বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন তিনি। যুক্তি বা কারণের তোয়াক্কা না করে খামখেয়ালি গ্রেফতারের বিপজ্জনক দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। লক্ষ্য আসলে সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় এবং অন্যান্য সরকারি এজেন্সিগুলো। সরাসরি না বললেও বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি এজেন্সিগুলোর আনা মামলায় অভিযুক্ত কিংবা ধৃতদের জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়রা বিচারকদের কুণ্ঠা বা অনীহার দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ এমনকী বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের, যাঁদের গ্রেফতারের নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ উদ্দেশ্য বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই ধরনের প্রবণতা মাথা চাড়া দেওয়ায় ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কথায়।
তাঁর বক্তব্য, যাঁর দায়রা আদালতেই জামিন পাওয়া উচিত, সেখানে তিনি জামিন না পেলে অবশ্যই দ্বারস্থ হবেন হাইকোর্টের। ঠিক তেমনই হাইকোর্ট জামিন না দিলে তিনি বিচার চাইতে যাবেন সুপ্রিম কোর্টে। এই অযথা কালবিলম্ব সমস্যাটাকে আরও জটিল করে তুলবে। বিশেষ করে যাঁদের গ্রেফতারের নেপথ্যে কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ বা যুক্তি নেই, যাঁরা শুধুই বিশেষ উদ্দেশ্য বা খামখেয়ালিপনার শিকার।