বালেশ্বরের ছাত্রীকে অগ্নিপরীক্ষার প্ররোচনা দেওয়া হয় অধ্যক্ষের ঘরে

বালেশ্বরের ফকিরমোহন কলেজের নির্যাতিতা ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল অধ্যক্ষের ঘরেই।

Must read

প্রতিবেদন: বালেশ্বরের ফকিরমোহন কলেজের নির্যাতিতা ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল অধ্যক্ষের ঘরেই। কেউ বা কারও কথা তাঁকে এমনভাবে আঘাত করেছিল যাতে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ দিতে বাধ্য হন নির্যাতিতা। অধ্যক্ষের কথা হয়তো তাঁকে এতটাই আঘাত করেছিল যা সহ্য করতে পারেননি তিনি। অধ্যক্ষের ঘরের সামনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন ওই ছাত্রী। বিস্ফোরক এই দাবি করেছেন মৃত ছাত্রীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ওইদিন অধ্যক্ষের ঘরে ছাত্রভর্তিকে কেন্দ্র করে বেশ ভিড় ছিল। দুপুরের ২০ মিনিটের বিরতিতেই এমন কিছু ঘটেছিল যা নির্যাতিতাকে প্ররোচিত করেছিল আত্মহত্যায়। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ও অ্যাকাডেমিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১০০ পড়ুয়াকে। ইচ্ছে করে ফেল করানো হচ্ছিল। ওই ছাত্রী অনেকবারই বলেছিলেন তাঁর উপরে নিপীড়নের কথা। কিন্তু চাননি আমি কিছু বলি কাউকে। কিন্তু নির্যাতিতার মৃত্যুর পরে আর মুখ না খুলে থাকতে পারলেন না ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

আরও পড়ুন-দেশজুড়ে তল্লাশির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

অগ্নিপরীক্ষার অর্থ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বন্ধু বলেছেন, নিশ্চয়ই অধ্যক্ষ এমন কিছু বলেছিলেন, যা সহ্য করতে পারেননি নির্যাতিতা। আসলে বিচারের জন্য লড়তে লড়তে একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন আমার বন্ধু। তাঁর মন্তব্য, একটা মানুষ মানসিকভাবে ঠিক কতটা বিধ্বস্ত হলে এভাবে নিজেকে শেষ করে দিতে পারেন।
এখানেই শেষ নয়, উঠে এসেছে নিপীড়নের আরও এক ভয়ঙ্কর তথ্য। তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতিতা অভিযোগ জানানোর পরে তা মিথ্যা প্রমাণ করতে প্রায় ৩০০ পড়ুয়াকে নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান। তারই ষড়যন্ত্রে ৭১ জন পড়ুয়া নির্যাতিতাকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে ডেপুটেশন দেয়। ছাত্রীর চরিত্রহননের চেষ্টাও হয়। অন্যদিকে ছাত্রীর পক্ষে সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে যান ১৫ থেকে ২০ জন পড়ুয়া। সবচেয়ে উদ্বেগ এবং লজ্জার কথা, সব জেনেবুঝেও অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধানকে আড়াল করার চেষ্টা করছিল অধ্যক্ষ। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শেষপর্যন্ত অধ্যক্ষের ঘরের সামনেই নিজের গায়ে আগুন দেন নির্যাতিতা। ১৪ জুলাই ভুবনেশ্বর এইমসে তাঁর মৃত্যু হয়। তার আগেই অবশ্য অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান এবং অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় ওড়িশার গেরুয়া পুলিশ।

Latest article