মিরপুর, ২৫ ডিসেম্বর : বড়দিনে ভারতীয় (Bangladesh- India) ক্রিকেটের জন্য সান্টা হয়ে এলেন রবিচন্দ্রন আশ্বিন। তাঁর হাত ধরে মিরপুরে রুদ্ধশাস জয় পেল ভারত।
অশ্বিন যখন ১, ফরওয়ার্ড শর্ট লেগে মোমিনুল তাঁর ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন। তিনি ওটা ধরতে পারলে আট উইকেট পড়ে যেত রাহুলের দলের। তাহলে অষ্টম উইকেটে ৭৪ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপ আর হত না। শ্রেয়সও দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারতেন না। কিন্তু এটাই ক্রিকেট। ক্যাচ মিসেস দ্যা ম্যাচ! ভারতের বিরুদ্ধে টেস্টে প্রথম জয় অধরাই থেকে গেল বাংলাদেশের। রাহুলরা জিতলেন ৩ উইকেটে। সিরিজ দাড়াল ২-০।
সকালে অক্ষর আর উনাদকট যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন, ভারতের দরকার আর ১০০ রান। কিন্তু এই দু’জন যখন শাকিব আর মেহেদির স্পিন সামলে নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই দুজনেই আউট হয়ে গেলেন। এমনকী ঋষভ পন্থও। এই ঋষভ ব্রিসবেনে এমন চাপের মুখে রূপকথার জয় উপহার দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটকে। কিন্তু মিরপুরে তিনি সেটা পারেননি। ফলে শেষ ব্যাটিং জুড়ি হিসাবে যাবতীয় চাপ এসে পড়েছিল অশ্বিন আর শ্রেয়সের উপর। তাঁরা সেই চাপ সামলে দলকে বড়দিনে জয় এনে দিয়েছেন।
সকালে প্রচণ্ড চাপ নিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন অক্ষররা। বল শুধু টার্ন করেনি, নিচুও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মেহেদিকে খেলা খুব কঠিন ছিল। তিনি অনুকূল পরিস্থিতিতে ভারতীয় ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন। ১৯ ওভারে ৬৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সকালে প্রথম আউট হন উনাদকট। তিনি ১৩ রান করে শাকিবের শিকার হয়েছেন। পরের উইকেট ঋষভের (৯)। তাঁকে ফেরান মেহেদি। এরপর অক্ষর (৩৪)। তাঁকেও ফিরিয়েছেন মেহেদি।
আরও পড়ুন-বম্ব সাইক্লোনে বিধ্বস্ত আমেরিকা, মৃত্যু ২৪
কিন্তু এরপর বাংলাদেশ (Bangladesh- India) আর কোনও সাফল্য পায়নি। পায়নি অশ্বিন ও শ্রেয়সের জন্য। অশ্বিন চারটি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৬২ বলে ৪২ রান করে নট আউট থেকে যান। আর শ্রেয়স ২৯ রানে নট আউট থাকেন চারটি বাউন্ডারির সাহায্যে। ম্যাচের সেরা হয়েছেন অশ্বিন। টেস্টে যাঁর পাঁচটি সেঞ্চুরি রয়েছে।
প্রথম টেস্ট আগেই বড় ব্যবধানে জিতেছিল ভারত। দ্বিতীয় টেস্টও জেতায় ব্যবধান দাড়াল ২-০। তবে স্কোরশিটে যা-ই লেখা থাকুক না কেন, বাংলাদেশ কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম টেস্ট জয়ের অনেকটা কাছে চলে এসেছিল। এই সিরিজ জয়ের সুবাদে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার পথে আরও একটা ধাপ এগোল টিম ইন্ডিয়া। ৫৮.৯২ শতাংশ জয় নিয়ে আপাতত পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ভারত। ৭৬.৯২ শতাংশ জয় নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারতীয় দল। ওই সিরিজের ফলাফলের উপরেই নির্ভর করছে ভারতের ভবিষ্যৎ।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ওঠার দৌড়ে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাও (৫৪.৫৫ শতাংশ জয়)। তবে ভারত যদি অস্ট্রেলিয়াকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে টেস্ট সিরিজ জেতে, তাহলে সরাসরি ফাইনালে উঠে যাবে। ৩-০ ব্যবধানে জিতলেও সম্ভাবনা জিইয়ে থাকবে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাকি চারটি টেস্টের একটিতে হারতে অথবা ড্র করতে হবে।