হাসিনাকে রাজনৈতিক হেনস্থার ছক কষছে অন্তর্বর্তী সরকার?

বাতিল হল কূটনৈতিক পাসপোর্ট

Must read

প্রতিবেদন: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) ডিপ্লোম্যাটিক (কূটনৈতিক) পাসপোর্ট রদ করল মহম্মদ ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার৷ একইসঙ্গে রদ করা হয়েছে হাসিনা সরকারের আমলের বাংলাদেশের সাংসদদের পাসপোর্টও৷ গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা থেকে ভারতে চলে এসেছিলেন শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন রেহানা৷ এর পর থেকে তিনি এদেশেই আছেন বলে দাবি জানানো হয়েছে ভারত সরকারের সূত্রে৷ সংসদের বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যৎ কর্মসূচি স্থির করার জন্য শেখ হাসিনাকে কিছুদিন সময় দিচ্ছে ভারত সরকার৷ এরপরে হাসিনার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আর কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি নয়াদিল্লি৷ উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বাংলাদেশ ইস্যুতে সর্বদল বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের সুরেই কথা বলেছে সব বিরোধী দল। শেখ হাসিনা ও আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পাশাপাশি পদ্মাপারে তীব্র হয়েছে ভারত বিরোধী বিক্ষোভও। রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে আইনি জালে জড়িয়ে কারাবন্দি করতে হাসিনার (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত দায়ের হয়েছে প্রায় ৩৬টি মামলা, যার মধ্যে খুনের চেষ্টার মামলাও আছে৷ একইসময়ে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বেগম খালেদা জিয়ার পার্টি বিএনপি-র তরফে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে৷ এমন আবহে শেখ হাসিনার ডিপ্ল্যোম্যাটিক পাসপোর্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ব্যাকফুটে ফেলবে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

আরও পড়ুন- বদলাপুর: পুলিশকে তোপ বম্বে হাইকোর্টের

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এই কূটনৈতিক পাসপোর্ট পেয়েছিলেন হাসিনা। ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা অনুযায়ী কূটনৈতিক (ডিপ্লোম্যাটিক) বা সরকারি (অফিসিয়াল) পাসপোর্ট থাকলে বাংলাদেশের কোনও নাগরিক অন্তত ৪৫ দিন কোনও ভিসা ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পারেন। কিন্তু ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করায় তাঁর ভারতে অবস্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ইতিমধ্যেই ভারতকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছে আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদার দল বিএনপি। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। ফলে বিচারের স্বার্থে তাঁকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের উদ্যোগ ও রাজনৈতিকভাবে তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। ঘটনাচক্রে হাসিনার জমানাতেই ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ঢাকায় দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। সেখানে কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে দেশত্যাগীদের ক্ষেত্রে দেড় মাসের বিনা ভিসায় অবস্থানের সুযোগ পুনর্বিবেচনার প্রসঙ্গ রয়েছে বলে দাবি।

Latest article