অশান্ত বাংলাদেশ, আক্রান্ত বঙ্গসংস্কৃতি, অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল

Must read

প্রতিবেদন : ফের অশান্ত বাংলাদেশ (Bangladesh Violence)। রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং জেলায় রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে বিশৃঙ্খল জনতা। ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় আততায়ীদের গুলিতে গুরুতর জখম ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে পৌঁছানোমাত্রই বৃহস্পতিবার রাত থেকে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলাদেশে। শুরু হয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে এই হাদি ছিলেন অন্যতম প্রধান মুখ। ১২ ডিসেম্বর দিনের আলোয় প্রকাশ্যে তাঁকে গুলি করে চম্পট দেয় আততায়ী।

বাংলাদেশে  (Bangladesh Violence) এই হিংসাত্মক ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যে হিংসা ও পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা সর্বদা কেন্দ্র ও জাতির পাশে আছি। তবে বিজেপির কিছু নেতা বাংলাদেশ পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা টেনে পশ্চিমবঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে যে মন্তব্য করছেন, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রবণতা। এই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রক ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে। এর ফলে যদি কোনও হিংসা বা অশান্তিকর ঘটনা ঘটে, তার সম্পূর্ণ দায় বিজেপি নেতাদেরই নিতে হবে।

আরও পড়ুন-বাংলাদেশ এখন জিহাদিস্তান! জিহাদিদের তাণ্ডবে ক্ষোভ প্রকাশ তসলিমার

তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, নির্বাচনের আগে বিজেপি রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে, কিন্তু দিদির মা-মাটি-মানুষের সরকার বাংলায় এমন কিছুতেই হতে দেবে না। ভুলে গেলে চলবে না, এই সেই বিজেপি যারা বলেছিল ‘বাংলা ভাষা বলে কিছু নেই’ এবং রানাঘাটের এক বিজেপি সাংসদ দাবি করেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত তুলে দেওয়া হবে!

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভারত-বিরোধী ইনকিলাব মঞ্চ, জামাত এবং ছাত্র-জনতার নামে চলে এই তাণ্ডব। ভারতীয় দূতাবাস, আওয়ামি লিগ অফিস, ঢাকার ধানমণ্ডিতে এবং রাজশাহিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ছাড়াও হামলাকারীদের লক্ষ্য হয়ে ওঠে সাংবাদিকেরা এবং সংবাদপত্রের অফিসও। রাজশাহিতে আওয়ামি লিগের অফিস ভাঙতে নিয়ে আসা হয় বুলডোজার। ঢাকার কারওয়ান বাজারে দুই সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেলি স্টার’ দফতরে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের ক্রেন দিয়ে উদ্ধার করে দমকল। এর ফলে শুক্রবার প্রকাশিত হতে পারেনি ‘প্রথম আলো’র সকালের সংস্করণ। চট্টগ্রাম ও রাজশাহিতে হামলা চলে ভারতীয় উপ-দূতাবাসে। খুলনায় আততায়ীদের গুলিতে খুন হয়েছেন ইমদাদুল হক মিলন নামে ৪৫ বছরের এক সাংবাদিক। ময়মনসিংহ জেলায় ভালুকা উপজেলায় দীপুচন্দ্র দাশ নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় দেহ। শুক্রবার সকালেও চলে বিক্ষোভ, তাণ্ডব। ধানমণ্ডিতে সনজিদা খাতুন প্রতিষ্ঠিত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ‘ছায়ানট’ ভবনে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা।

বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকার শাহবাগে জমায়েত হন বহু মানুষ। নিমেষের মধ্যে জমায়েতে ছড়িয়ে পড়ে প্রবল উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে র্যাব। শুক্রবার সকালেও শাহবাগ মোড়ে স্লোগান দিতে শুরু করে একদল বিক্ষোভকারী। বেলা ১২টা নাগাদও বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাড়িতে শাবল-হাতুড়ি নিয়ে দেওয়াল ভাঙতে দেখা যায় কয়েকজনকে। খুলনা, সিলেট, ফরিদপুর-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে অশান্তির খবর। শনিবার রাষ্ট্রীয় শোকদিবস ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

Latest article