সুমন করাতি হুগলি: এই পুজোর নেপথ্যে রয়েছে এক উত্তরণের কাহিনি। সেবাইত থেকে জমিদার হওয়ার গল্প। জমিদারি পাওয়ার পরেই হুগলির পাঠক পরিবারে মহাধুমধামে দুর্গাপুজোর সূচনা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, তারপর থেকে ২২৯ বছর ধরে একই কাঠামোয় গড়ে উঠছে মাতৃমূর্তি। শূন্যে গুলি ছুঁড়ে পুজোর সূচনার ট্র্যাডিশন আজও অম্লান। বর্ধমান মহারাজার জনার্দন মন্দিরের সেবাইত ছিলেন এই পাঠক পরিবারের সদস্য। মহারাজা খুশি হয়ে হুগলির তাল চিনান গ্রামের জমিদারি স্বত্ব দেন পাঠকদের।
আরও পড়ুন-ইজরায়েল ফেরত ৫৩ জনের রেলভাড়া দিয়ে বঙ্গভবনে রাখল রাজ্য
দশ হাজার বিঘা খাসজমি নিয়ে শুরু হয় পাঠকদের জমিদারি। কৃষ্ণকান্ত পাঠক হয়ে যান তাল চিনান গ্রামের জমিদার। ক্রমশ জমিদারি বাড়তে থাকে। শুধু তাল চিনান নয়, চাঁদপুর, মহেশপুর, হিরন্নবাটি মৌজার মালিক হয়ে যান কৃষ্ণকান্ত পাঠক। এই বছর ২২৯ বছরে পড়ল হুগলির পাঠক বাড়ির দুর্গাপুজো। একসময় সন্ধিপুজোর আগে শূন্যে গুলি ছুঁড়ে জানান দেওয়া হত সন্ধিপুজোর ক্ষণ। এখনও তা হয় লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়ে। বর্ধমানের রাজার বাড়ি জনার্দনের সেবা পুজো করেই জমিদারি পেয়েছেন পাঠকরা। তাই এই পাঠক পরিবারের কুলগুরু বা কুলদেবতা জনার্দন। জমিদারির পাশাপাশি জনার্দনের মন্দির তৈরি করে পাঠক পরিবার।
আরও পড়ুন-সুপ্রিম ধাক্কায় রাজ্যপাল আরও নমনীয়, ৭১ বন্দিমুক্তি
এখনো বৈষ্ণব মতে পুজো হয় মা দুর্গার। পশুবলি হয় না, তবে ফলবলির চল আছে। সারা বছর পাঠকবাড়ি শুনশান থাকলেও পুজোর সময় খান ৩২ ঘর গমগম করে আত্মীয়- পরিজনে। বিরাট জমিদার বাড়ির দুর্গা দালান ১ কাঠামোয় বিরাজ করেন স্বয়ং দেবী দুর্গা। গোটা গ্রামের মধ্যে আগে বিসর্জন হয় পাঠক বাড়ির প্রতিমা। তারপরে গোটা গ্রামের প্রতিমা বিসর্জন হবে। এটাই এই গ্রামের রীতি, আজও চলে আসছে সেই রীতি।