প্রতিবেদন : অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ টেলিমেডিসিন। কোভিড-সন্ত্রাসের আবহে এর অপরিহার্যতা প্রমাণিত হচ্ছে বারবার। আর এই টেলিমেডিসিনেই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে বাংলা। মাত্র ৩ মাস হল শুরু হয়েছে রাজ্যে। কিন্তু এর মধ্যেই এক বিশেষ মাত্রা পেয়েছে বাংলার টেলিকনসালটেশন। নিঃসন্দেহে চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে এ এক অসাধারণ সাফল্য। করোনা পরিস্থিতিতে যানবাহনে দূরের হাসপাতালে না গিয়ে নিজের এলাকা বা গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসেই দূরচিকিৎসার সুযোগ। দেখানো যাচ্ছে ডাক্তার। মিলছে চিকিৎসা এবং ওষুধ সংক্রান্ত পরামর্শও। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হচ্ছেন এভাবে। সরকারি তথ্য বলছে, নিত্যদিনের টেলিকনসালটেন্সিতে দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলা। টেলিকনসালটেন্সির সংখ্যার বিচারে এখনও পর্যন্ত দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে বাংলা। গত ২ অগাস্ট ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ নামে শুরু হয় এই টেলিকনসালটেশন পরিষেবা। রাজ্যের ৬৮টি কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫০০ চিকিৎসক অডিও-ভিসুয়াল মাধ্যমে এখন এই পরিষেবার কাজে যুক্ত।
আরও পড়ুন : কেন্দ্র বিমাতৃসুলভ আচরণ করলেও, বিনামূল্যেই রেশন রাজ্যে
পাশাপাশি রাজ্য সরকারের দৌলতে রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এখন অত্যাধুনিক ছোঁয়া পেয়েছে। বাম আমলে এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের যে করুণ দশা হয়েছিল তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সরকার গঠন করার পর থেকেই বিশেষ নজর দেওয়া হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ যাতে চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য রাতারাতি অত্যাধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় এখানে। গড়া হয় দ্রুত উন্নত পরিকাঠামো। এবারে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও বেশি করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজ্যে সাড়ে চার হাজার নতুন সাব সেন্টার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এই মর্মে জারি করা হয়েছে একটি বিজ্ঞপ্তি। মূলত ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকাতেই এমন সাব-সেন্টার গড়া পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য স্পষ্ট। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির উপরে যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। ব্লকে ব্লকে এজন্য জমির খুঁজতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। জমি না পাওয়া গেলে সাব-সেন্টার তৈরি করা হতে পারে অব্যবহৃত সরকারি ভবনে। শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেই এমন ২২৪টি সাব সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই জেলায় ইতিমধ্যে বাইশটি জমি চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। তাই গোটা রাজ্যে মূলত সরকারি জমির উপর নির্ভর করা হচ্ছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আপাতত এই ধরনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এইসব জেলায় স্বাস্থ্য ভবন এমনভাবে পরিকল্পনা করছে যাতে এই পরিকল্পনা থেকে কোনও অঞ্চলই বাদ না যায়। শুধু গ্রামাঞ্চলে নয়, শহরেও হেলথ সাবসেন্টার গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কলকাতা মহানগরীতে এই ধরনের পাঁচটি সাব সেন্টারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।