প্রতিবেদন : রাজ্যের মানুষের কাছে পর্যাপ্ত পানীয় জল পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার মাস আগেই তিনি তার দিশা দেখিয়েছিলেন। এখন গোটা দেশে সেই মমতা-মডেলই অবলম্বন করছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে প্রতিহিংসার রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা অব্যাহতই রেখেছেন। যথারীতি বাংলার প্রাপ্য টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখতে তাই বর্তমানে কাজ চলছে রাজ্যের টাকায়। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি আরও ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নবান্ন।
আরও পড়ুন-৯ মাস মহাশূন্যে সুনীতারা, বুধে ফিরেই রিহ্যাবে
২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে কেন্দ্র নিজের অংশের ৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ২ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা দিয়েছে। আর রাজ্য নিজের অংশের ৪ হাজার ৯৯০ কোটি টাকার মধ্যে দিয়ে দিয়েছে ৪ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। মন্ত্রী পুলক রায় এই মর্মে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, নিয়ম হল কেন্দ্র অর্থ দিলে তার ম্যাচিং গ্রান্ট দিতে হয় রাজ্যকে। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা ঘটছে। রাজ্য আগে টাকা দিচ্ছে। তারপর কেন্দ্রের অনুদানের জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হচ্ছে। ২০২১-এর নির্বাচনে হারের পর থেকেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্র এই নির্লজ্জ খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আজব ব্যাপার, মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথকে মডেল করেই কেন্দ্র দেশের সমস্ত রাজ্যকে কাজের গুণমান উন্নয়নের নির্দেশ দিচ্ছে। অথচ বাংলার প্রাপ্য নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি বাড়ি জলপ্রকল্প নিয়ে বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিষেবা নিরবচ্ছিন্ন করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। হাতেনাতে সেই ফল পায় রাজ্যবাসী। কিন্তু দেশের অন্যান্য রাজ্যে জল জীবন মিশনের গতি-প্রকৃতি খুব ধীর লয়ে চলছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বঞ্চনা না থাকলেও সেভাবে অগ্রগতি হয়নি। সেক্ষেত্রে বাংলার জলস্বপ্ন প্রকল্পের অগ্রগতিকে মডেল হিসেবে উপস্থাপনা করা হয়েছে। এবারের বাজেটে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার সময়সীমা ২০২৮ পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্র। জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাটিলের নেতৃত্বাধীন কমিটি প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছেন। তুলে ধরা হয়েছে মমতা মডেলের কথা। রাজ্যের তরফে বৈঠকে যোগ দেওয়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি আধিকারিকরা জানান, সেখানে রাজ্যের কাজের অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্র প্রশংসা করেছে। বৈঠকে ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষে রাজ্যে মোট ১৫ হাজার কোটি টাকার কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর অর্ধেক দেবে রাজ্য, বাকিটা কেন্দ্র। কিন্তু ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত পাঁচ বছরের সম্পূর্ণ টাকা এখনও দেয়নি কেন্দ্র। নতুন অর্থবর্ষে এপ্রিল থেকে নয়াদিল্লি ফের টাকা দেওয়া শুরু করবে বলে বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদৌ বাংলা সেই প্রাপ্য পাবে কি না, তা নিয়ে ধন্দই রয়ে