প্রতিবেদন : কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি বাংলায় যতই রাজ্য সরকারের নিন্দা করুক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকা স্বাস্থ্য দফরের কাজে রীতিমতো পঞ্চমুখ নরেন্দ্র মোদি সরকার। এ প্রসঙ্গে নবান্নের দাবিতে কার্যত সিলমোহর দিয়ে কেন্দ্রের রিপোর্ট কার্ড বোঝাল, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বাংলা ক্রমশ ভারতসেরা হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।
সদ্য প্রকাশিত দেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সর্ববৃহৎ সমীক্ষা রিপোর্ট ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে। সেই রিপোর্টে মোদি সরকার তথ্য তুলে স্পষ্ট জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার হ্রাস, হাসপাতালে এসে প্রসব করানো (প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব) বৃদ্ধি, সরকারিক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের খরচ কমানো ইত্যাদি অসংখ্য বিষয়ে বাংলা এখন ভারতসেরাই। আর এসব সম্ভব হয়েছে গত পাঁচ বছরে। অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালেই।
আরও পড়ুন : করোনা সচেতনতার প্রচারে শিব-যোমরাজ!
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রধান ফোকাস এখন স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। শুধু এখন নয়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্যে ব্যবস্থার উন্নতিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এখন তারই সুফল হাতেনাতে পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ। আর এই কাজে সবসময় পাশে থাকার জন্য সর্বাগ্রে ধন্যবাদ জানাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা না থাকলে এই সফলতা আসতো না।
*এক নজরে রিপোর্ট কার্ড*
(১) ২০১৫ সালে NFHS-4 সমীক্ষার সময় পশ্চিমবঙ্গের সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার বা ‘’নিওনেটাল মর্টালিটি রেট’’ ছিল ২২। গত ৫ বছরে মমতা সরকার তা কমিয়ে ১৫.৫-তে নামিয়ে এনেছে। যা আগামিদিনে আরও কমবে।
(২) NFHS-4 এর সময় রাজ্যের প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব ছিল ৭৫.২। প্রতি ১০০টি প্রসবের মধ্যে ৭৫.২ শতাংশ হতো হাসপাতালে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের NFHS রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে এখন সিংহভাগ প্রসবই হচ্ছে হাসপাতালে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯২ শতাংশ। সরকারি হাসপাতালে প্রসবের সংখ্যাও আগের ৫৬.৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭২.৪ শতাংশ।
(৩) কেন্দ্রের মোদি সরকারের এই রিপোর্ট কার্ড আরও জানাচ্ছে, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বাংলার। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলিতে এখনও কন্যাভ্রূণ হত্যায় সেভাবে লাগাম টানা যায়নি। সেখানে বাংলায় গত ৫ বছরে কন্যাসন্তান জন্মের হার অনেকটা বেড়েছে। প্রতি হাজার পুত্রসন্তানের নিরিখে কন্যা জন্মের হার আগের সমীক্ষায় ছিল ৯৬০। এবার বেড়ে হয়েছে ৯৭৩।
(৪) বাংলায় অপুষ্টির অন্যতম সূচক হল বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ১৮.৫-এর কম হওয়া। গত সমীক্ষায় রাজ্যের ২১.৩ শতাংশ মহিলার বিএমআই ছিল ১৮.৫-এর নীচে। NFHS-5
-এ দেখা গিয়েছে, ১৮.৫-এর কম বিএমআই থাকা মহিলার সংখ্যা নেমে গিয়েছে ১৪.৮ শতাংশে। বাচ্চাদের পুষ্টির সূচকেও গত পাঁচ বছরে উন্নতি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আগের সমীক্ষায় জানানো হয়েছিল, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়া বাচ্চার সংখ্যা ছিল ৪৭.৪ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে ৫৯.৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মায়ের দুধ, সঙ্গে আধাশক্ত বা শক্ত খাবার খাওয়া বাচ্চাদের সংখ্যাও ৫২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৭.৮ শতাংশ।