প্রতিবেদন : বাংলার চিকিৎসা এখন বিশ্বে মডেল। ফের মিলল বাংলার বিশ্ব-স্বীকৃতি। বাংলার চিকিৎসকদের অদম্য প্রয়াসে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই এবার তুলে ধরা হবে বিশ্বের কনফারেন্সে। এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের এই সাফল্যকে কুর্নিশ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সাফল্যের কথা তুলে ধরে লেখেন, এটা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘বেঙ্গল মডেল’ বিশ্বের রোগ নিরাময়ের মডেল হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সম্প্রতি হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জেন বাখম্যান, যাঁকে নন-কমিউনিকেবল রোগের একজন জনক হিসাবে ধরা হয়, তিনি এসএসকেএম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং দেশের প্রথম এই ধরনের রাজ্য-পরিচালিত উদ্যোগ হিসাবে প্রশংসা করেন। এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত সকলকে আমার অভিনন্দন।
আরও পড়ুন-‘সবই ভগবানের ইচ্ছে’ শ্রী ভেঙ্কটেশ স্বামী মন্দিরে পদপিষ্টের ঘটনায় আজব সাফাই নির্মাতার
উল্লেখ্য, এসএসকেএম তিন বছর ধরে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের চিকিৎসার নতুন পথ খুলে দিয়েছে। হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সুজয় ঘোষের নেতৃত্বে সেই চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন বাংলার ১৫টি জেলায় পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় আধুনিক পন্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানাভাবে নিয়েছে। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে মারণ টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বাংলা যে নতুন দিশা দেখিয়েছে, সেটাই বিশ্ব-সম্মেলনে তুলে ধরা হবে। এসএসকেএম-এর চিকিৎসকদের সেই অগ্রণী ভূমিকা তুলে ধরেন হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অন্যতম ডিরেক্টর জেন বাখম্যান।
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না হলে মৃত্যু অবধারিত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও এই ব্যয়বহুল ও জটিল চিকিৎসায় বহু ক্ষেত্রেই চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হত শিশুদের। সেখান থেকে মুক্তির পথ হিসাবে ২০২২ সালে প্রথমবার এসএসকেএম-এর চিকিৎসকরা এই চিকিৎসার একটি মডেলের পাইলট প্রকল্প শুরু করেন ৫ জেলায়। সেখানে রোগ নির্ণয়, পরিচালনা, প্রয়োজনীয় রেফার, পুনর্বাসনের পাশাপাশি রোগীদের যথাযথ তালিকা মেনে চলা ও ফলোআপে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে রাজ্যের ১৫ জেলার ১,৫০০ শিশু এই প্রকল্পে চিকিৎসা পাচ্ছে।
গত শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে আসেন জেন বাখম্যান। এসএসকেএম হাসপাতালের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর দাবি, এই নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ ক্লিনিকটি ভারতের মতো সম্পদের দিক থেকে দরিদ্র দেশে একটি বাস্তব সমাধান। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি কনফারেন্সে এই বিষয়টি আমরা তুলব। আমরা চাই ডাঃ ঘোষ ভারতে আমাদের এই নেটওয়ার্কের পরিচালকের দায়িত্ব নিন। বর্তমানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তিন গুরুত্বপূর্ণ রোগ নিরাময় নিয়ে কার্যক্রমে একজন পরিচালকের ভূমিকায় রয়েছেন জেন বাখম্যান।

