প্রতিবেদন : ডিভিসি মাত্রাতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণেই পুজোর মুখে রাজ্যে ম্যান মেড বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হল বলে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)।
আজ বুধবার দুপুরে হুগলির পুরশুড়া, খানাকুলের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনের পর মুখ্যমন্ত্রী যান ঘাটালে। শুকনো রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে নয়, একেবারে একহাঁটু জলে নেমে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন সেখানকার পরিস্থিতিও ভয়াবহ। এদিন প্রথমে তিনি পুরশুড়ায় পৌঁছন। রাজ্য সড়কের ওপর অনেক মানুষকে আশ্রয় নিতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। একটি ব্রিজের ওপর থেকে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া ভয়ঙ্করভাবে ফুলে ফেঁপে ওঠা জলের পরিস্থিতি দেখে সেখানেই ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, ডিভিসির সঙ্গে কথা হয়েছিল। তবুও জল ছাড়া হল। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। ঝাড়খণ্ড বাঁচাতে সব জল বাংলায় ছেড়ে দিয়েছে। এটা পরিকল্পিত ম্যান মেড বন্যা। কেন্দ্রীয় সরকার ড্রেজিং করছে না। ফারাক্কায় ড্রেজিং হয় না। ডিভিসিও করে না। পলি জমে জমে এই পরিস্থিতি হয়েছে। না হলে আরও ২ লক্ষ কিউসেক জল ধরে রাখতে পারত ডিভিসি। এভাবে একসঙ্গে সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণের একাধিক জেলা প্লাবিত হয়েছে। বাংলা আর কত বঞ্চনা সহ্য করবে! ঘাটালে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) বলেন, ২০০৯ সালের পরে এতো জল ছাড়া হয়নি। আমরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ডিপিআর করছি। দু’বছর লাগবে পুরো কাজটা শেষ করতে। ১,৫০০ কোটি টাকার বাজেট ধরা আছে। কেন্দ্রকে বারবার বলেও হয়নি। রাজ্যই করছে। এই কাজটা হয়ে গেলে ঘাটালে আর বন্যা হবে না। আজও জল ছেড়েছে ডিভিসি। সঙ্গে রয়েছে পূর্ণিমা। মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে বলেন, সবকিছু ফেলে সর্বশক্তি দিয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নবান্নে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও।
আরও পড়ুন- দিল্লি: অতিশি সম্পর্কে কুকথা, স্বাতীর ইস্তফা চাইল আপ
খানাকুল-সহ হুগলির একাধিক প্লাবিত অঞ্চল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন বানভাসি মানুষদের সঙ্গে। জেলাশাসক-সহ প্রসাশনিক আধিকারিকদের নির্দেশ দেন দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, জল, বাচ্চাদের খাবার, ওষুধের ব্যবস্থা করতে। বিশেষ করে ঘাটাল ও খানাকুলের বেশ কিছু এলাকায় এসডিআরএফ, এনডিআরএফের একাধিক টিম নামানো হয়েছে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের জন্য।
জেলা প্রশাসনকে পর্যাপ্ত নৌকোর ব্যবস্থাও করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটাল পরিদর্শন সেরে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর চলে যান। সেখানে সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। আগামিকাল বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়া-সহ আরও বেশকিছু বন্যাকবলিত এলাকায় যাবেন তিনি। এভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্লাবিত এলাকা ঘুরে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাঁকে কুরনিশ জানান গ্রামবাসীরা।