প্রতিবেদন : মিথ্যাচারের রাজনীতির উপর ভরসা এখন বাংলার বিজেপি নেতাদের। বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, বাংলায় নাকি জলাশয় (Water reservoir) কমে যাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কেন্দ্রের রিপোর্টেই বিরোধী দলনেতার মিথ্যাচারের রাজনীতি প্রমাণিত হয়ে গেল। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের জলাশয় গণনার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার। তাতেই দেখা যাচ্ছে জলাশয় এবং জলাধারের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে বাংলা। দেশে যখন ২৪ লক্ষ জলাশয় তখন তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাংলায়। শুধু বাংলাতেই জলাশয় রয়েছে ৭ লক্ষ ৪৭ হাজার। সবচেয়ে কম সিকিমে ১৩৪টি। বিজেপি সরকারের আমলেই এই গণনা। সেই রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে দেশের মধ্যে একটি জেলায় সর্বাধিক জলাশয় রয়েছে বাংলায়। সেই জেলাটি হল দক্ষিণ ২৪ পরগনা। যেখানে জলাশয়ের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার। ফলে বৃহস্পতিবার প্রকাশ্য সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা যে মিথ্যাচার করেছিলেন, তার প্রমাণ দিল তাদের সরকারেরই রিপোর্ট। এবার কী বলবেন গদ্দার অধিকারী আর দল?
আরও পড়ুন- অডিও ক্লিপে ফাঁস গরু পাচার করছেন বিজেপি বিধায়কের পুত্র, জড়িত নেতারাও
কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সারা দেশে মোট ২৪,২৪,৫৪০টি জলাশয় (Water reservoir) পাওয়া গিয়েছে। তারমধ্যে গ্রামীণ এলাকায় জলাশয়ের সংখ্যা ৯৭.১ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে জলাশয়ের সংখ্যা মাত্র ২.৯ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি পুকুর রয়েছে এবং অন্ধ্রপ্রদেশে রয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ট্যাঙ্ক। তামিলনাড়ুতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি হ্রদ এবং জল সংরক্ষণ প্রকল্প সবচেয়ে বেশি রয়েছে মহারাষ্ট্রে। বাংলা ছাড়াও অন্যান্য ৬টি রাজ্যে ১ লক্ষাধিক জলাশয় রয়েছে। চারটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জলাশয়ের সংখ্যা ১,০০০ এর কম।
জলাশয় গণনা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ৮৩.৭ শতাংশ জলাশয় মাছ চাষ, সেচ, গৃহস্থলী এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়। বাকি ১৬.৩ শতাংশ জলাশয় নির্মাণকাজ, শুকিয়ে যাওয়া, পলি জমে যাওয়া এবং অন্যান্য কারণে ব্যবহার করা হয় না। ৯.৬ শতাংশ জলাশয় রয়েছে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায়, ৮.৮ শতাংশ জলাশয় বন্যা কবলিত এলাকায়, ৭.২ শতাংশ রয়েছে খরা কবলিত এলাকায় এবং ২ শতাংশ জলাশয় মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায়। আরও জানা গিয়েছে, দেশের মোট জলাধারের ৫৫.২ শতাংশ জলাশয় বেসরকারি মালিকানাধীন। বাকি ৪৪.৮ শতাংশ রয়েছে সরকারি মালিকানায়। তারমধ্যে রয়েছে পঞ্চায়েত, রাজ্যের সেচ বা জল সম্পদ দফতরের মালিকানা। মোট জলাশয়ের ১.৬ শতাংশ দখলদারী হয়েছে। তারমধ্যে ৯৫.৪ শতাংশ গ্রামীণ এবং ৪.৬ শতাংশ শহরাঞ্চলের জলাশয় জবরদখল হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট জলাশয়ের ৫৯.৫ শতাংশ পুকুর, ১৫.৭ শতাংশ ট্যাঙ্ক, ১২.১ শতাংশ রিজার্ভার, চেক ড্যাম ৯.৩ শতাংশ, হ্রদ ০.৯ শতাংশ এবং অন্যান্য জলাশয়ের হার ২.৫ শতাংশ।