নাসায় বাঙালি বিজ্ঞানীর সাফল্যে ‘নর্থস্টার’ স্বীকৃতি, জলের রং নির্ণয়ের যন্ত্র আবিষ্কার

Must read

প্রতিবেদন : নাসা থেকে ভাষা, সর্বত্রই বাংলায় জয়-জয়কার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বিশ্ববাংলা’র যে কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দেন, তার জাজ্জ্বল্য প্রমাণ হুগলির নবগ্রামের গৌতম চট্টোপাধ্যায়। দরিদ্র পরিবারের সন্তান, স্কুল জীবনে হ্যারিকেনের আলোয় পড়াশোনা। তিনিই আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পথপ্রদর্শকের আসনে। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির উজ্জ্বল নাম বাঙালি বিজ্ঞানী ড. গৌতম চট্টোপাধ্যায়। নাসায় মহাকাশ বিজ্ঞানে অসাধারণ সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি সম্মানিত হচ্ছেন ‘নর্থস্টার’ (Northstar) সম্মানে।

‘নর্থস্টার’ (Northstar) নাসার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্মান। নাসার সর্বোচ্চ স্বীকৃতিগুলির মধ্যে একটি। গৌতম চট্টোপাধ্যায় তাঁর কাজের মাধ্যমে এই সম্মান অর্জন করে নিতে চলেছেন। তিনি শুধু নতুন আবিষ্কারের পথিকৃৎ নন, অন্যদের বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহিত করার কাজেও অগ্রণী। তিনি এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন, যা জলের রং নির্ণয় করতে পারে। ভিনগ্রহে কোনও জলের অস্তিত্ব বা প্রাণ আছে কি না, তা জানিয়ে দেবে তাঁর তৈরি যন্ত্র। এছাড়াও অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও প্ল্যানেটরি সায়েন্স নিয়েও একাধিক কাজ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন-উচিত শিক্ষা দেব বিজেপিকে

২০২৩-এ তিনি পেয়েছিলেন পিপলস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড। তারপর এখন পাচ্ছেন নাসার সর্বোচ্চ সম্মান ‘নর্থস্টার’। তারপরও বদলায়নি তাঁর জীবনযাপন। এখনও বাড়িতে এলে বন্ধুদের সঙ্গে তাঁর আড্ডা দেওয়া চাই, বাড়ির সকলের সঙ্গে হইহুল্লোড় করে কাটান সদাহাস্যময় গৌতম চট্টোপাধ্যায়। দরিদ্র পরিবারে জন্ম। কোন্নগরের এক সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষাকে করেছিলেন ব্রত। বিই কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে টাটায় ইনস্টিটিউট অফ ফাউন্ড মেডেল রিসার্চে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নাসায় কর্মরত। মহাকাশ গবেষণার জন্য একের পর এক অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন। শুধু গবেষণা নয়, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ২০২৪-এ নিউ ইয়র্ক থেকে পেয়েছেন আর্মস্ট্রং মডেল রেডিও ওয়ালসের সম্মাননা। ছোট ঘরে জন্মেও যাঁরা বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের কাছে অনুপ্রেরণা ও আদর্শের এক নাম গৌতম চট্টোপাধ্যায়। শুধু পরিশ্রম, ন্যায়-নিষ্ঠা আর আত্মবিশ্বাসে ভর করেই সাফল্যের শিখরে ওঠা যায়, তা দেখিয়েছেন তিনি।

গৌতমবাবুর দিদি লিলি আচার্য বলেন, ভাই ছোট থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে থাকত। তার ভালবাসা ছিল বিজ্ঞান। আজ গর্বে বুক ভরে উঠছে যে ভাই আজ এই সর্বোচ্চ জায়গায়। বোন ডলি চক্রবর্তী বলেন, দাদা মহাকাশ বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছেও, তাঁর পা মাটিতেই আছে। দাদা আমাদের আজও মাটির মানুষ। কোন্নগরের পুরপ্রধান স্বপন দাস বলেন, এটা সত্যি গর্বের যে একজন বাঙালি আজ আবার বিশ্বের দরবারে শ্রেষ্ঠ আসনে অধিষ্ঠিত। নবগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান গৌর মজুমদার বলেন, এত উপরে গেলেও যে মাটির মানুষ থাকা যায়, সেটা গৌতম দেখিয়ে দিয়েছে। সত্যি আজ গর্বের দিন।

Latest article