প্রতিবেদন : ফের একবার ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বাংলা। রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে যুক্ত হতে চলেছে একাধিক পালক। লক্ষ্য বিনিয়োগ। আজ, বুধবার শুরু হচ্ছে দু’দিনব্যাপী বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। ফের একবার বিশ্ব দরবারে প্রমাণিত হবে বাণিজ্যে বসতে বাংলা। শিল্প বিনিয়োগের মাপকাঠিতে দেশের অন্য রাজ্যগুলির তুলনায় অনেক এগিয়ে বাংলা। এবার বিনিয়োগের ডালি নিয়ে ৪০টি দেশের ২০০ বিদেশি প্রতিনিধি হাজির হচ্ছেন বাণিজ্য সম্মেলনে। আজ দুপুর ২টোয় নিউ টাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। তার আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হয়ে গেল চা-চক্র। হোস্ট বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলের আগেই যিনি পৌঁছেছেন ইকোপার্ক উৎসারি গ্লাস হাউসে। পৌঁছেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আগে ডিনার হত, এখন আর ডিনার করা হচ্ছে না। একটা চা-চক্রের আয়োজন হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২২টি দেশের অ্যাম্বাসাডার আসতে পেরেছেন। প্রায় ৪০টি দেশ আসছে। তার মধ্যে ২০টি পার্টনার কান্ট্রি। ২০০ ফরেন ডেলিগেটস। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই প্রোগ্রামটা একেবারে ইউনিক। আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রার্থনা করি। সম্মেলন কত বড় হবে সেটা মানুষ বলবে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর আসা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অক্টোবর মাসেই কনফার্ম করেছিলেন আসবেন। বুধবার আসার কথা ভুটানের প্রাইম মিনিস্টারের। কিন্তু শুনছি দিল্লির সঙ্গে কিছু সমস্যা হয়েছে। আমি চাই ওঁরা আসুন কারণ ভুটান বাংলার সীমান্ত। পড়শি দেশের সঙ্গে আমাদের নিজেদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলতে হবে। বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী এ-কথা বললেও বেশি রাতে খবর পাওয়া যায় শিল্প সম্মেলনে আসছেন না ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে এই অনুমতি দেয়নি। এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল বাংলার প্রতি কেন্দ্রের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কতটা তীব্র। এই ঘটনায় চারদিকে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মুকেশ আম্বানি আসছেন। আমাদের এখানের সমস্ত ক্যাপ্টেন অফ দি ইন্ডাস্ট্রিও আসবেন। যাঁরা প্রত্যেক বছর আসেন, তাঁরা সকলেই আসবেন। এছাড়াও অতিরিক্ত অনেকেই আসছেন। এদিনের চা-চক্রে অনেক অতিথি, অভ্যাগত, শিল্পপতিরা এসেছিলেন। ছিলেন হর্ষ নেওটিয়া, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, সঞ্জয় বুধিয়ার, প্রসূন মুখোপাধ্যায়, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, রমেশ মিত্তাল, উমেশ চৌধুরী, সঞ্জীব পুরীর মতো প্রথম সারির শিল্পপতিরা। মুখ্যমন্ত্রী সকলের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন। কেনিয়া-কঙ্গো, জাপান, জার্মানি থেকে প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই চলে এসেছেন। এদিন তাঁরাও এসেছিলেন চা-চক্রে। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, সুজিত বসু, শশী পাঁজা। এছাড়াও ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক-মুখপাত্র ও সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। সব মিলিয়ে এদিন ইকোপার্কে মিলনমেলার মতো এক অন্য পরিবেশ তৈরি হয়। শিল্প সম্মেলনের আগের সন্ধ্যার এই চা-চক্র বুঝিয়ে দিল— এবারের শিল্প সম্মেলন সব দিক থেকেই হতে চলেছে বিশাল মাপের। শিল্প সম্মেলনের তদারকির জন্য এই দুটো দিন এখানেই ঘাঁটি গেড়ে থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অস্থির, ভারতে উড়িয়ে এনে মুখেভাত হল স্বপ্নদর্শীর