চিকিৎসার নামে লুঠ বন্ধে পাশ হল বিল

এবার থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে চিকিত্সার খরচের প্যাকেজ রোগীর পরিবারকে জানাতে হবে। এর বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না।

Must read

প্রতিবেদন : প্রিয়জনের চিকিত্সার জন্য ঘটি-বাটি বিক্রি করে পথে বসেছে এরকম পরিবারের সংখ্যা ভূরি ভূরি। বেসরকারি হাসপাতালে একবার রোগী নিয়ে গেলে জীবনের সর্বস্ব চলে যাওয়াও বিচিত্র নয়। চিকিত্সার নামে কার্যত লুঠ চলে। এবার এই মারাত্মক প্রবণতা বন্ধ করতে কড়া বিল আনল রাজ্য সরকার। দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্টস (রেজিস্ট্রেশন, রেগুলেশন অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৫। যা মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল। এবার থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে চিকিত্সার খরচের প্যাকেজ রোগীর পরিবারকে জানাতে হবে। এর বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন-ভেবেছেন কী! গলাবাজি করে জাজমেন্ট পাশ করাবেন? সভ্যতা শিখুন… বাম আইনজীবী শামিমকে ক্ষুব্ধ বিচারপতি

বিলে বলা হয়েছে, প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমকে চিকিৎসা-সংক্রান্ত খরচের তালিকা প্রকাশ্যে রাখতে হবে। দৈনিক চিকিৎসা খরচের আপডেট দিতে হবে। যাবতীয় রেকর্ড রোগীকে দিতে হবে এবং তা সংরক্ষণ করতেও হবে। সরকারি গাইডলাইন ছাড়িয়ে অতিরিক্ত খরচ নেওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ২ লিটার জল খেয়ে ২০ লিটার দেখিয়ে, ৫টা ওষুধে ৫ লক্ষ টাকার বিল— এটা আর চলবে না। মন্ত্রীর সংযোজন, এই ধরনের জনমুখী বিল সারা ভারতবর্ষে কোথাও নেই। রাজ্য সরকার চায়, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র হাতে হাত ধরে পরিষেবা দিক। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের বিল নিয়ে বহু মানুষ সমস্যায় পড়েন। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেই এই সংশোধন। রোগীর অধিকার থাকবে তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচ জানার। রেগুলেটরি কমিশনের নজরদারিতে এই বিল বাস্তবায়িত হবে। কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন জাস্টিস অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন চালুর জন্য রাজ্য সরকার নিজস্ব সফ্টওয়্যার তৈরি করবে। বিলে ১৬টি সংশোধনী যুক্ত হয়েছে। লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা রাখা হয়েছে ৯০ দিন। বিধায়ক অতীন ঘোষ বলেন, এই বিল দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াবে। যেভাবে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো কসাইখানায় পরিণত হয়েছে, সেখান থেকে রেহাই দিতেই এই উদ্যোগ। শেষে জবাবি ভাষণে চন্দ্রিমা বলেন, মানুষের স্বার্থেই এই বিল। কেউ যেন এক জনের ভুলে পুরো ব্যবস্থার ক্ষতি না করে, সেটাই দেখা হবে। ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন নিয়ে কথা বললে দিল্লি রেগে যাবে। আলোচনা শেষে সংশোধনী বিলটি গৃহীত হয়।

Latest article