প্রতিবেদন : নিজেরা আইন ভেঙে উল্টে তৃণমূল কংগ্রেসকে হেনস্তা। এটাই এখন ত্রিপুরার বিপ্লব দেব সরকারের স্বাভাবিক নীতি হয়ে উঠেছে। রবিবারই প্রকাশ্য সভায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী আদালত সম্পর্কে বিতর্কিত ও চরম নিন্দনীয় মন্তব্য করে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনলে কোনও তদন্তই হবে না। কারণ পুলিশ তাঁর হাতে।
আরও পড়ুন : বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ নিল না ত্রিপুরা পুলিশ
তিনি যেভাবে পুলিশকে চালাবেন তারা সেভাবেই চলবে। একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এধরনের চূড়ান্ত বেআইনি মন্তব্যের পর ত্রিপুরার জঙ্গলের রাজত্বের ছবিটা গোটা দেশের সামনে ফের একবার বেআব্রু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রার কর্মসূচি আটকাতে ছলে-বলে-কৌশলে নানা কুযুক্তি খাড়া করে বিজেপি বুঝিয়ে দিয়েছে রাজ্যে অভিষেকের পদার্পণকে কতটা ভয় পাচ্ছে তারা। তৃণমূলের কর্মসূচি রুখতে বিপ্লব দেব প্রশাসনের হাস্যকর ছলচাতুরি রাজ্যের মানুষের কাছে বিজেপির প্রকৃত চেহারা আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে। সর্বশেষ, বিজেপি সরকার নিজেরাই আদালতে জানিয়েছিল নভেম্বর মাস পর্যন্ত রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। তাই কোনও দল কোনও কর্মসূচি করতে পারবে না। অথচ রাজ্যবাসী দেখছে, নিজেদের আনা নির্দেশ নিজেরাই লঙ্ঘন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ১৪৪ ধারা অমান্য করে একের পর এক সভা করছেন।
এরই প্রতিবাদে সোমবার বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা অমান্য করার অভিযোগ জানাতে থানায় গেলে বিজেপির ক্রীতদাস পুলিশ নির্লজ্জভাবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের হেনস্তা করে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জমা নেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় পুলিশ। পূর্ব আগরতলা থানায় এদিন তৃণমূল নেতা মামুন খানের নেতৃত্বে দলের একাধিক নেতা বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, নিজের সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা কীভাবে ভাঙতে পারেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী? তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী একদিকে যেমন নিজের সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভেঙেছেন, অন্যদিকে একইসঙ্গে ত্রিপুরা হাইকোর্টে দেওয়া সরকারের হলফনামাও নিজেও লঙ্ঘন করেছেন। এর বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন :বিজেপি এখন করোনা ভাইরাস
মামুন খানরা হাইকোর্টের অর্ডার কপি দেখিয়ে থানার পুলিশকে বলেন, ইনডোর-আউটডোর কোনও মিটিং-মিছিলই করা যাবে না। তাহলে, মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে বহু মানুষের জমায়েত করে সভা করতে পারেন? তৃণমূলের যুক্তিজালে অপ্রস্তুত পুলিশ অফিসাররা নেতাদের থানায় বসিয়ে রেখে প্রথমে দুর্ব্যবহার করেন, তারপর উধাও হয়ে যান। এমনকি তৃণমূল নেতার ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়। বিজেপির নির্দেশে থানার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক তৃণমূল নেতাদের বলেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কোনও অভিযোগ নেবেন না। ত্রিপুরা পুলিশের এই হেনস্তা ও মুখ্যমন্ত্রীর আইন ভাঙার অভিযোগ না নেওয়ার পর রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত, এবার অনলাইনে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা।