রাজনীতি থেকে বিদায় নিলেন বিজেডির বিতর্কিত পান্ডিয়ান

টানা আড়াই দশক ওড়িশায় ক্ষমতায় থাকার পর বিজেপির কাছে কুর্সি খুইয়েছেন বিজু জনতা দল (বিজেডি)-এর প্রধান নবীন পট্টনায়ক।

Must read

প্রতিবেদন: প্রশাসনিক যোগ্যতা নিয়ে সেভাবে কেউ আঙুল তোলেননি তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু বিজেডির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনি তাঁর। সুপ্রিমো নবীন পট্টনায়কের পরেই দলের সেকেন্ড ইন কমাণ্ড হয়ে ওঠাটা মোটেই ভালচোখে দেখেননি নবীনের ঘনিষ্ঠরাও। তাই নির্বাচনে বিজেডির বিপর্যয়ের জন্য তাঁরা দায়ী করেছিলেন প্রাক্তন আমলা আদতে তামিল ভি কে পান্ডিয়ানকেই। সেই পান্ডিয়ানই সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন রবিবার।

আরও পড়ুন-অসমে হিমন্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ গেরুয়া শিবিরে, জোড়হাটে আসনে ধরাশায়ী পদ্মপ্রার্থী

টানা আড়াই দশক ওড়িশায় ক্ষমতায় থাকার পর বিজেপির কাছে কুর্সি খুইয়েছেন বিজু জনতা দল (বিজেডি)-এর প্রধান নবীন পট্টনায়ক। তাঁর এই আকস্মিক পরাজয়ের জন্য প্রাক্তন আমলা ভি কে পান্ডিয়ান দায়ী বলে অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। এই বিতর্কের আবহেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথা জানালেন নবীনের ব্যক্তিগত সচিব থেকে ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠা পান্ডিয়ান। রবিবার একটি ভিডিয়ো বার্তায় সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের কথা জানিয়ে পান্ডিয়ান বলেন, আমি নবীনবাবুকে সাহায্য করতে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন সচেতন ভাবেই নিজেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। দলের পরাজয়ের নৈতিক দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বিজেডি কর্মী-সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, আমার এই যাত্রায় যদি আমি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকি, তবে দুঃখিত। আমার বিরুদ্ধে যে প্রচার চালানো হয়েছিল, তা যদি বিজেডির পরাজয়ের কারণ হয়, তার জন্যও আমি দুঃখিত। আইএএস আধিকারিক হিসাবে কর্মদক্ষতার জন্য ওড়িশার সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীনের সুনজরে ছিলেন পান্ডিয়ান। গত নভেম্বরে আমলার চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু পান্ডিয়ান দলের প্রবীণ নেতাদের কোণঠাসা করছেন, এই অভিযোগ তুলে লোকসভা ভোটের আগেই দলত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। ভোটের ফল বেরোলে দেখা যায়, ওড়িশার ২১টি আসনের মধ্যে একটিও পায়নি নবীনের দল। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই হওয়া বিধানসভা ভোটেও পরাজয়ের মুখ দেখে বিজেডি। ১৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫১টিতে জেতে তারা। বিজেপি জেতে ৭৮টি আসনে। ২০০০ সাল থেকে টানা মুখ্যমন্ত্রী থাকা নবীন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

আরও পড়ুন-মুসলিম সংরক্ষণে অনড় চন্দ্রবাবু সমর্থন হারানোর ভয়ে টুঁ শব্দ নেই মোদির

বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি দাবি করেছিল, তামিলনাড়ুর আইএএস আধিকারিক পান্ডিয়ানকেই নিজের উত্তরসূরি হিসাবে বেছে নিচ্ছেন নবীন। নবীন নিজে অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দেন। জানান, তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী বেছে নেবেন ওড়িশার মানুষ। কিন্তু নবীন যখন এই ঘোষণা করছেন, তখন ওড়িশায় তিন দফায় নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। বাকি ছিল মাত্র একটি দফার ভোট। তাই যে ওড়িয়া অস্মিতা ছিল নবীনের অন্যতম রাজনৈতিক পুঁজি, তাতেই বড় ধরনের ঘা লাগে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তামিলনেতাকে মেনে নিতে পারেননি ওড়িশার মানুষ। নবীন পট্টনায়কের নির্বাচনী বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ সেটাই।

Latest article