সংবাদদাতা, নদিয়া : মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অন্যায়ভাবে যাঁর সাংসদ পদ কেড়ে নিয়েছিল মোদি সরকার, সেই মহুয়া মৈত্রের উপরেই আস্থা রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তাকেঁ দলের প্রার্থী করেন। একই সঙ্গে দলনেত্রীর আস্থার মর্যাদা দিয়ে বিজেপিকে মুখের উপর মোক্ষম জবাব দিলেন মহুয়া মৈত্র। বলা বাহুল্য, বাংলার তথা কৃষ্ণনগরের মানুষই আসলে মহুয়ার পক্ষে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের পাশে থাকলেন। প্রায় ৫৮ হাজার ভোটে মহুয়া তাঁর নিকটবর্তী প্রার্থী বিজেপির তথাকথিত ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়কে পরাজিত করেন। মহুয়ার প্রাপ্ত ভোট ৬ লক্ষ ২৪ হাজার ৭১১ ভোট। অমৃতা পেয়েছেন ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৮ ভোট। দু-দু’বার এই লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে এসেও মিথ্যাচারী নরেন্দ্র মোদি কৃষ্ণনগরের জনতার মন জয় করতে পারেননি।
আরও পড়ুন-মানুষের রায়ে বসিরহাট কেন্দ্রে বোল্ড আউট বিজেপি, চক্রান্তের জবাব দিল সন্দেশখালি
এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে মোদি ফোনও করেছিলেন। তারপরও তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বারের জন্য সাংসদ হলেন। প্রথম থেকে এই কেন্দ্রে জয়ের মাধ্যমেই জবাব দেওয়ার পালা ছিল। কারণ মানুষের ভোটে জয়ী সাংসদকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয় টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার মিথ্যা অভিযোগে। এ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। সংসদের এথিক্স কমিটিতে ডেকে হেনস্থাও করা হয় মহুয়াকে, এই অভিযোগ ওঠে। তারপরই সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। বিজেপির এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জবাব দেবেন, তখনই বলেছিলেন মহুয়া। শেষ পর্যন্ত তাদের হেভিওয়েট প্রার্থী অমৃতা রায়কেও হারতে হল তাঁর কাছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রেস্টিজ আসনে হেরে বিজেপির মুখে কালির ছিটে পড়ল। এমনকী মহুয়া মৈত্র যখন অন্যত্র প্রচার সারছিলেন, তখন তাঁর অফিসে, কলকাতায় হানা দেয় বিজেপির এজেন্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি নতুন করে চাপ তৈরি করে ইডি। সব চাপ উপেক্ষা করে মানুষের ভোটে জিতে সাংসদ হয়ে ফের সংসদে স্বমহিমায় হাজির হবেন মহুয়া মৈত্র। ভোটে জিতে মঙ্গলবার মহুয়া বলেন, বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ভারতকে ধ্বংস করছে। দেশকে নষ্ট করতে চাওয়া মোদি-শাহের বিরুদ্ধে মানুষ সরব হওয়ায় আমি খুশি।