প্রতিবেদন : বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া আপত্তিকর কাজের বিরুদ্ধে যখন বাংলাদেশের মধ্যে থেকেই প্রবল প্রতিবাদ উঠতে শুরু হয়েছে, তখন নির্লজ্জের মতো এনিয়ে শকুনের রাজনীতি শুরু করেছে বিজেপি। তাদের তরফে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের ঘটনার পর শান্তিপুরে বিজেপি বেশি ভোটে জিতবে।’’
এটা কোনও রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য? এটা কোনও রুচিশীল সুস্থ মানুষের কথা হতে পারে?
এনিয়ে দুই বাংলাতেই তীব্র নিন্দা চলছে।
প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের ঘটনা থেকে এখানকার ভোটে হিন্দু ভাবাবেগের ব্যবসা করতে চাইছে কারা? বাংলাদেশের কিছু মানুষকে বলি দিয়ে এখানে উগ্র রাজনীতি করে ডুবন্ত নৌকাকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে না তো? বাংলাদেশের ঘটনা যথাযথ তদন্ত চাই। তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন এর পিছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র আছে। সেই ষড়যন্ত্রকারী এবং তাদের মদতদাতাদের মুখোশ খুলে দেওয়া দরকার।
বাংলাদেশে পুজোর সময় অপ্রীতিকর হামলা, আক্রমণ হয়েছে।
আরও পড়ুন : জাগোবাংলা প্রচ্ছদের ছবি সংরক্ষিত হবে
এর কারণ হিসেবে যা বলা হয়েছে তা চক্রান্ত বা প্ররোচনার অঙ্গ। যেসব ভিডিও ছড়িয়েছে তা উদ্বেগের। পুজোমণ্ডপ আক্রমণের বিরোধিতা হয়েছে। মন্দিরে হামলা ও প্রাণহানির তীব্র নিন্দা হয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি এটাও দেখা গিয়েছে—বাংলাদেশে বহু পুজো নির্বিঘ্নে হয়েছে। হাসিনা সরকার হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষই হামলার নিন্দায় গর্জে উঠেছেন। বহু মুসলিম সংগঠন পুজোগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে এগিয়ে এসেছেন। এসব থেকে স্পষ্ট যে পরিকল্পিতভাবে একটি চক্র এই হামলা চালালেও বাংলাদেশের মানুষ সম্প্রীতি চান, সংহতি চান।
বাংলাদেশে যে মিছিল, সভা হয়েছে, তা শান্তিপ্রক্রিয়াকে জোরদার করছে।এক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকছে— বাংলাদেশের এই হামলার ঘটনায় লাভ কাদের? হঠাৎ একটি ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি কয়েকটি জায়গায় হামলা করল, এটা কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা? দেখা যাচ্ছে, এতে লাভ দুই শক্তি ) বাংলাদেশে যারা অস্থিরতা তৈরি করতে চায়।
খ) এখানকার বিজেপি, যারা বাংলাদেশের কিছু হিন্দুকে বলি দিয়ে এখানে হিন্দু আবেগে ভোট চায়। যেটা শুভেন্দু অধিকারীর মুখ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, যাঁরা হিন্দু হিন্দু করে এতবার ভোট চান, বিধানসভা ভোটের আগে ভোট টানতে বাংলাদেশের মন্দিরে পুজো দিতে যান, সেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে গোলমাল চলাকালীন কথা বললেন না কেন? এটা রাজ্যের বিষয় না। এটা কেন্দ্রের এক্তিয়ার। রুটিন বিভাগীয় বিবৃতি ছাড়া কোনওরকমভাবে দায়িত্ব পালন করেনি কেন্দ্র। এখন শকুনের রাজনীতি করে বিজেপির ধান্দাবাজ শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের ঘটনায় এখানে বিজেপির ভোট বাড়বে।’’ এই বিবৃতির মধ্যে গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত আছে। এই রাজ্যে বিজেপি লাটে উঠছে। এখানে ধর্মীয় আবেগ ব্যবহার করতে বাংলাদেশের হামলাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। তাহলে বাংলাদেশের ঘটনার পিছনে ঠিক কী কী চক্রান্ত আছে, কারা কেন কীভাবে পুজোয় আক্রমণের ক্ষেত্র তৈরি করে দিল, তারও যথাযথ তদন্ত দরকার।