প্রতিবেদন : দল ভাঙছে। প্রত্যেক দিন। পাহাড় থেকে সাগর পর্যন্ত। বিস্ফোরক দলের নেতা-নেত্রী থেকে সাংসদ। এই অবস্থায় পদ্মশিবির মিথ্যাচারের আশ্রয় নিল নিজেদের টিকিয়ে রাখতে। বুথে কর্মী নেই, পতাকা ধরার লোক নেই। কলকাতায় থাকা একাধিক নেতা-নেত্রী অন্তরালে। তাই মুখরক্ষায় বিজেপির চতুর রাজনৈতিক পদক্ষেপ হল— যেখানে পারো ঝঞ্ঝাট করো। আর তাদের দোসর হল বাম ও কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-উড়ান উড়বে কোচবিহারে
বিজেপি পার্টি অফিসে কর্মী নেই। হাতে গোনা কয়েকজন নেতা বসে শুধু বিবৃতি দিয়ে চলেছে। আসলে মিথ্যাচার তো তাদের রক্তে, গত বিধানসভা ভোটে প্রমাণিত। সোনার বাংলা গড়ার ডাক দেওয়ার নেতারা এখন রাজনীতির হিমঘরে। আসলে রাজনীতি নয়, বিজেপি নেতৃত্ব মিথ্যাচারের অভিনয় শুরু করেছে। যেখানে মানুষ গণতন্ত্রের উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে সেখানে সমর্থন হারিয়ে মিথ্যাচারের পথ নিয়েছে বিজেপি। আসলে তারা চেয়েছিল মানুষ যাতে ভােট দিতে না আসে। কারণ যত ভােট পড়বে তত পরাজয়ের ব্যবধান বাড়বে বিজেপির। অনেক ঘটা করে বিজেপির দিল্লি নেতৃত্ব বাংলার জন্য পর্যবেক্ষক ইত্যাদি তৈরি করেছিল।
আরও পড়ুন-‘লক্ষ্য’ ভেদ করে কীর্তি শ্রীকান্তের
কিন্তু সেই পর্যবেক্ষকদেরও দেখা যায়নি ভোটের ময়দানে। মেদিনীপুর থেকে উড়ে আসা এক নেতা বাজার গরম করতে এসে গরম বক্তৃতা দেওয়ার চেষ্টা করলেও মানুষ তাঁকে গ্রহণ করেনি। ফলে পরাজয়ের আগেই বিজেপি পরাজিত। নব্য বিজেপিতে এখন প্রতিযোগিতা চলছে ভাষণ দেওয়ার। কারণ দিল্লির নজরে আসা। আর আদি বিজেপি সেই নজরে আসার কাজে তুলে দিয়েছে কংক্রিটের প্রাচীর। স্বভাবতই বিজেপির মধ্যে লড়াইটা এখন একপক্ষের সঙ্গে আর এক পক্ষের। দলের মধ্যে ইতিমধ্যেই দাবি উঠেছে, যদি বিধানসভা ভােটের পরাজয়ের জন্য রাজ্য সভাপতি বদল হয়, গড়া হয় নতুন কমিটি। সেখানে পুরভোটের বিপর্যয়ের জন্য কোন সভাপতি বা কোন নেতারা দায়ী থাকবেন? কারণ প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে ভোট প্রচার-সহ একাধিক ইস্যুতে একাধিক নেতাই প্রকাশ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করে চলেছেন। আর তাতেই দিশেহারা কর্মীরা।
আরও পড়ুন-‘বুথে এজেন্ট দেওয়ার লোক নেই, বিজেপির মুখ লুকোনোর জায়গা নেই’ বললেন ফিরহাদ হাকিম
তাঁরা বুঝতে পেরেছেন নিজেদের স্বার্থে নব্য বিজেপি নেতারা এই দলে নাম লিখিয়েছেন। যাঁদের কাছে রাজনীতির আদর্শ নেই বরং আছে নির্লজ্জভাবে টাকা নেওয়ার রীতি। কলকাতা পুরভোটের পর বিজেপি আরও ভাঙবে তা বলা বাহুল্য। অনেকেই দলের কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন। বাংলার উন্নয়ন এবং কলকাতার উন্নয়ন নিয়ে সত্যিকারের যাঁরা কাজ করবেন তাঁদের জন্যই ভাববে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে কলকাতা মহানগরী এদিন দেখল বিজেপির রাজনৈতিক কঙ্কালসার চেহারাটা। বুথে কর্মী নেই। কিন্তু রাস্তায় শুয়ে থাকা কর্মীদের কোথায় পেল বিজেপি? যদি সংগঠনই মজবুত হয়, আদর্শ থাকে তা হলে বিজেপি ভোট প্রক্রিয়াতে সক্রিয় থাকত, নাটকে নয়।