প্রতিবেদন : বাংলা ও বাঙালির দুই গর্ব বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যে বিভাজন তৈরির চক্রান্ত করছে বিজেপি। তাদের আসল উদ্দেশ্য বাংলা এবং বাঙালিকে অপমান করা। বাঙালির মধ্যে ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করা। আসলে আরএসএস-বিজেপি বরাবরই রবীন্দ্রনাথ-বিদ্বেষী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘ব্রিটিশের দালাল’ বলে দেগে দিতে চায়। কিন্তু ব্রিটিশ শাসক কখনওই বিশ্বকবির উপর মোটেও প্রসন্ন ছিল না। সেই ঔপনিবেশিক শাসককেই আজকে অনুসরণ করছে আরএসএস-বিজেপি। বাংলাবিদ্বেষী বিজেপি-আরএসএসের এই গভীর ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা করে ক্ষোভ উগরে দিল দেশবাঁচাও গণমঞ্চ। রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্কিমচন্দ্রের মধ্যে বিভাজন তৈরির অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিল গণমঞ্চ। এদিন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর নেতৃত্বে ছিলেন সাংসদ দোলা সেন, সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য, ইতিহাসবিদ সৈয়দ তানভির, বাসুদেব ঘটক, বর্ণালি মুখোপাধ্যায়, সিদ্ধব্রত দাস প্রমুখ।
আরও পড়ুন-মোবাইল লিঙ্ক নিয়ে ফের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে কমিশন
বিজেপি-আরএসএসের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক ‘জনগণমন’-এর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার এবং ‘বন্দে মাতরম’-কে অকারণে বিতর্কের কেন্দ্রে টেনে এনে ধর্মীয় বিভাজন তৈরির প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে দেশবাঁচাও গণমঞ্চ। সংগঠনের তরফে পূর্ণেন্দু বসু বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দু’জনেই বাংলা ও বাঙালির গর্ব। কিন্তু এই দু’জনের মধ্যেও এখন বিভাজন করতে চাইছে বিজেপি। ‘বন্দে মাতরম’ কিংবা ‘জনগণমন’ নিয়ে কোনও কথা বলার কোনও অধিকার নেই বিজেপি-আরএসএসের। কারণ, জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম থেকে ওরা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল। আর এই দুটি গানই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল স্লোগান ছিল। ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান দিয়ে একের পর এক বিপ্লবী ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দিয়েছিলেন। বঙ্কিমকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘‘বঙ্কিমচন্দ্র জাতীয় সাহিত্যের আকাশে প্রথম উজ্জ্বল নক্ষত্র’’। আর বঙ্কিমচন্দ্র বিশ্বকবিকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘‘রবিবাবুর কবিত্ব প্রতিভা দেখিয়া বিস্মিত হইতে হয়!’’ তাই এই দু’জনের মধ্যে বিভাজন তৈরির কোনও অর্থই হয় না। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতা ঢেকে দেশের আসল সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে এই দ্বন্দ্ব-বিতর্কের সৃষ্টি করেছে!

