প্রতিবেদন : আগামী জুন মাসের ৪ তারিখে সব আসনের ফল প্রকাশিত হবে। কিন্তু তার আগেই মে মাসের ৪ তারিখে সন্দেশখালি-সহ বসিরহাটের ফল বেরিয়ে গিয়েছে। কারণ ওইদিন সন্দেশখালির প্রকৃত সত্য সামনে চলে এসেছে। রবিবার বসিরহাটের বাদুড়িয়ার জনসভা থেকে বলে দিলেন, আত্মবিশ্বাসী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। একই সঙ্গে এদিন সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। দুর্যোগে একজন মানুষেরও যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। সন্দেশখালি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল ক্যামেরার সামনে স্বীকার করেছে, সন্দেশখালিতে কোনও ধর্ষণ হয়নি। কোনও ঝামেলা হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ফাঁসানোর জন্য বিজেপি নেতৃত্ব মহিলাদের ২০০০ টাকা করে দিয়ে ধর্ষণের মতো মারাত্মক অভিযোগ করেছে থানায়। সেইসঙ্গে বাংলার পাঁচ কোটি মহিলার সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। তাই এই ভোট শুধু আমাদের প্রার্থীকে জেতানোর বা বিজেপিকে হারানোর ভোট নয়, যারা মহিলাদের সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত করেছে, বাংলার ১০ কোটি মানুষের সম্মান দেশের ১৪০ কোটি মানুষের কাছে বিক্রি করেছে তাদের এমনভাবে জবাব দিতে হবে যাতে আগামী ১০ বছর এরা সন্দেশখালির মাটিতে পা না রাখতে পারে। এই ঝড়-জলের দিনেও দলীয় প্রার্থী হাজি নুরুলের সমর্থনে বাদুড়িয়ার এই সভা জনজোয়ারে পরিণত হয়েছিল। দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এসেছিলেন সকলে। বিশেষ করে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যা দেখে আপ্লুত অভিষেকও (Abhishek Banerjee)।
আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর বারাণসীর মিটিংয়েও বাংলার কথা, হারের আতঙ্ক বিজেপিতে
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বসিরহাটে বিপুল জয় হয় তৃণমূলের। সেখানে বাদুড়িয়াতে আপনারা ৩৯ হাজারের ব্যবধানে আমাদের প্রার্থীকে জিতিয়েছিলেন। ২০২১ সালে আমাদের বিধায়ককে ৫৬ হাজার ভোটে বাদুড়িয়ার মাটিতে জিতিয়েছিলেন। এরপরই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে একহাত নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজেপির সভাপতি বাংলায় এসে বলছেন ৩৫টি আসনে বিজেপিকে জেতান দিদির সরকার ফুস হয়ে যাবে। এরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উন্নয়নের জন্য ভোট চাইছে না। একটা দল ভোট চাইছে রাজ্যে নির্বাচিত সরকারকে ভাঙার জন্য— তোপ অভিষেকের। ভাবতে পারেন রাজনৈতিক অবনতি কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। এদের ছেড়ে কথা বলা উচিত? তাঁর সংযোজন, রেখা পাত্রর ভিডিও দেখেছেন? দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির কাছে যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে তারা আন্দোলনের মুখ নয়, অন্য লোককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে অভিষেক বলেন, রেখা পাত্রকে বলব আপনার ছোট-বড়-সেজো-মাঝারি নেতাদের ডেকে আনুন। গত দশ বছরে মোদি সরকার বাদুড়িয়ার জন্য কী করেছে আর আমাদের সরকার কী করেছে তার রিপোর্ট কার্ড পেশ করা হোক।
দুর্যোগের প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, মানুষ বিপদে পড়লে সবার আগে তৃণমূলের লোকেরা গিয়েই আপনাদের পাশে দাঁড়াবে। ত্রাণের ব্যবস্থা করবে। থাকার ব্যবস্থা করবে। খাবারের ব্যবস্থা করবে। বিজেপির লোকেদের কোনও দিন পাবেন না।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ইতিমধ্যে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানবিকতার পরিচয় দিয়ে এর পরে তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা প্রয়োজনে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি করার দরকার নেই। এই অবস্থায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কোনও শিশু-প্রবীণ-মহিলা একজনেরও যাতে সমস্যা না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরে কর্মীদের এই দুর্যোগে বলব, প্রয়োজনে নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।