মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বাংলাভাষীদের উপর হেনস্থার বেশ কিছু ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার ও রবিবার প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু দেখা গেল সেনা কর্মীরা এসে আজ, সোমবার সেই মঞ্চ ভেঙে দেয় ও প্যান্ডেলের কাপড় খুলে নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভাঙা মঞ্চে দাঁড়িয়েই ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘’আজকের ঘটনায় আমি সেনাকে দোষারোপ করছি না, বিজেপিকে দোষারোপ করছি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কথায় এটা করা হয়েছে।”
আরও পড়ুন-চার ঘণ্টা আলোচনা! বিধানসভায় বাংলা ভাষা রক্ষার প্রস্তাব
বিজেপিকে নিশানা করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমার একটাই কথা এখানে গাড়ি চলাচলের অসুবিধা নেই।কোথাও রাস্তা আটকে কিছু করা হচ্ছে না। শনি ও রবিবার প্রতিবাদ সভা হয়। আমাদের পারমিশন নেওয়া ছিল। প্রয়োজনে পুলিশকে বলত। দরকার হলে পুলিশ প্যান্ডেল খুলে দিতে পারত। আমরাই সভা অন্যত্র সরিয়ে দিতে পারতাম। আমরা অন্য জায়গায় শিফট করতে পারতাম। সেটা না করে এই আচরণ অনৈতিক। মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির পাদদেশে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করি।” সেনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ”এটা আপনাদের দোষ নয়। দিল্লির কথায়, বিজেপি কথায় এটা করা হয়েছে। সমস্ত এজেন্সিকে অপব্যবহার করা হচ্ছিল। ভেবেছিলাম, সেনাকে অপব্যবহার করবে না। কিন্তু সেনারও অপব্যবহার করা হলো। স্টেজ ভেঙে দিয়েছে। প্যান্ডেল আর্মিকে দিয়ে খুলিয়েছে। আর্মির বিরুদ্ধে আমার ক্ষোভ নেই। আর্মিকে যখন বিজেপির কথা শুনতে হয় তখন সমস্যা। যখন আমি আসছিলাম তখন ২০০ র মত আর্মি পালাচ্ছিল। আমি বললাম আপনারা দিল্লির বিজেপির কথায় করেছেন এই কাজ। আমি আপনাদের নয়, বিজেপিকে দোষ দিচ্ছি। কাল একটা অনুষ্ঠান ছিল। ল এন্ড অর্ডার পুলিশের বিষয়। নগরপাল আমাদের পার্টির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করতে পারত। এটা আর্মি নয়, পেছনে কে আছে? বিজেপি ও তাদের সরকার আছে। সেনার অপব্যবহার করল বিজেপি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এদের ব্যবহার করা হচ্ছে। যাদের আমি শ্রদ্ধা করি তাদের দিয়ে মঞ্চ ভাঙতেন না, কাপড় খোলাতেন না। এটা আনএথিক্যাল ও ক্ষমতার অপব্যবহার। বিজেপিকে ধিক্কার জানাচ্ছি, বিজেপি দেশের লজ্জা। তারা মানুষের সমর্থন পাবে না। আর্মিকেও যদি এভাবে অপব্যবহার করে তাহলে সংবিধান, মানুষের অধিকার কোথায় থাকবে? সব এজেন্সী তো ললিপপ। একটা এজেন্সির নাম বলুন যারা নিরপেক্ষ। এরা স্বৈরাচারী পক্ষ। যখন বিজেপি থাকবে না কোথায় পালাবে এরা? মানুষ আছে, মানুষ কিন্তু রুখে দাঁড়াবে। ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা পুলিশের থেকেও পারমিশন নিয়েছি। প্যান্ডেল ও হবে এবং অনুষ্ঠানও হবে। তবে রানী রাসমণি রোডে।”
আরও পড়ুন-৭৫ বছর পরে বক্সায় গন্ডার ফেরানোর পরিকল্পনা
মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করেই মুখ্যমন্ত্রী জানান ‘’ধর্না আমাদের চলবে, আটকানোর ক্ষমতা বিজেপির নেই। এর বিরুদ্ধে সব ব্লক ওয়ার্ডে পঞ্চায়েতে কাল থেকে প্রতিবাদ হবে। রানি রাসমণিতে কাল থেকে কর্মসূচি হবে। এখন প্রতিদিন হবে। আমাদের কর্মীদের পেটানো হয়েছে।এরা বলে বাংলা বলে ভাষা নেই। সব জায়গায় বাঙালিদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। বাংলার মানুষ আরো বেশি করে বাংলায় কথা বলুন। আমরাও দেখতে চাই এই ভাষা সন্ত্রাস কোথায় গিয়ে পৌঁছয়। আমাদের আন্দোলন আরো জোরদার হবে। আমরা রাজনৈতিক ভাবে এর মোকাবিলা করব। গণতান্ত্রিক ভাবে লড়ব। মানুষ আমাদের পাশে আছে।”