প্রতিবেদন : গেরুয়া শিবিরকে তীব্র অস্বস্তিতে ফেললেন বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী (MLA Mukut Mani Adhikari)। আরও একটু স্পষ্ট করে বললে, বিজেপির তথাকথিত নীতি-নৈতিকতার আসল রূপটা প্রকাশ করে ফেললেন তাদের গুণধর বিধায়ক। তিনি আবার যে সে বিধায়ক নন, এক্কেবারে ডাক্তার-বিধায়ক। বিজেপির নয়নের মণি। কিন্তু তাঁর কীর্তিকলাপ জানলে অবাক হতে হয়। মুখে বড় বড় কথা বললেও বিনা পণে সামাজিক বিয়েতে মোটেই বিশ্বাস নেই তাঁর। নির্যাতন চালিয়েছেন নববিবাহিত স্ত্রীর উপরে। আসক্তিও নাকি একাধিক মহিলাসঙ্গে। বিয়ের পরেও তাই নিজের আসল রূপটা লুকিয়ে রাখতে পারেননি সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর কাছেও। চেয়ে বসেছেন কোটি টাকার পণ। এমএলএ হোস্টেলে মহিলাদের নিয়ে নিশিযাপন এবং স্ফূর্তির অভিযোগও উঠেছে এই গুণধর গেরুয়া বিধায়কের বিরুদ্ধে। অন্য কেউ নয়, এসব অভিযোগ এনেছেন তাঁর সদ্যবিবাহিত রেজিস্ট্রি-করা স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরীই। বিয়ের মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই ধরে ফেলেছেন বিধায়ক স্বামীর ভয়ঙ্কর রূপটা। রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। ভোটের আগে নীতিকথা আর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। ভোটের পরেই ভোঁ-ভাঁ। ২৮ মে বিয়ে করেছেন। স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। পেশায় আইনজীবী। বিজেপির কীর্তিমান বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিয়ের পর এক কোটি টাকা পণ চেয়েছিলেন। কিন্তু সাধ না মেটায় স্ত্রী স্বস্তিকার সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন। অবশেষে ভুল ভেঙেছে স্ত্রীর, বুঝতে পেরেছেন মানুষ চিনতে ভুল করেছেন তিনি। তাই মুকুটমণির (MLA Mukut Mani Adhikari) বিরুদ্ধে দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের।
আরও পড়ুন- গবেষিকা নিগ্রহে অভিযুক্তকে আড়াল, ক্ষুব্ধ অধ্যাপক সংগঠন, উপাচার্যের শাস্তি চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি
দক্ষিণ কলকাতার পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা স্বস্তিকা থানায় যে অভিযোগ করেছেন তার মোদ্দা কথা, বহুদিন ধরে তাঁরা সম্পর্কে রয়েছেন। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ১৩ মার্চ বিয়ের জন্য অন লাইনে আবেদন করেন। ২৮ মে বিয়ে হয়। সাক্ষী ছিলেন বিজেপি বিধায়কের বাবা ভূপাল ও ভাই অনুপম। অন্যদিকে স্বস্তিকার মা ও ভাই৷ রেজিস্ট্রি বিয়ের পরেই অবাক কাণ্ড! মুকুটমণি ১ কোটি টাকা পণ চেয়ে বসেন! কিন্তু সেটা দেওয়া হবে না জানার পরেই বাড়ি আসা বন্ধ করেন। ডিভোর্সের জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং সামাজিক বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
এখানেই শেষ নয়, স্বস্তিকার আরও অভিযোগ, বহু মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে মুকুটমণির। এমএলএ হোস্টেলে অনেককে নিয়ে গিয়ে গভীর রাতে মোচ্ছব করেন। নিজেদের বিধায়ককে ভর্ৎসনা করা তো দূরের কথা, পণহীন বিয়ে যাতে ভেঙে দেওয়া হয় তার জন্য বিজেপির উপর মহল থেকেও চাপ দেওয়া হচ্ছে তাঁর উপরে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে একজন জনপ্রতিনিধি কী করে এমন কীর্তি করেন? কেন এখনও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কেন জিজ্ঞাসাবাদ হচ্ছে না তাঁকে। প্রশ্ন নানা মহলের। সাধারণ মানুষ জানতে চাইছেন, কেন মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি নেতারা?
গেরুয়া নেতারা মুখে নৈতিকতার ফুলঝুরি ছোটাবেন, আর অন্যদিকে অসামাজিক কাজ করে বেড়াবেন, তা হতে পারে না। রোজ বিকেলে যাঁরা মঞ্চ আলো করে নানা উপদেশ দেন, এবার তাঁদের নৈতিকতার ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে। এবার মুখ খুলুন। না হলে ধরে নিতে হবে এই সামাজিক অপরাধের সমর্থক আপনারাও। এর আগে বিজেপির এক সাংসদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তারপরেও দলে তিনি স্বমহিমায়। এবার নৈতিকতা জলাঞ্জলি দিয়ে বিজেপির মুকুটের মুকুটে আরও কিছু পালক গুঁজে দিলে সত্যিই অবাক হওয়ার থাকবে না!