প্রতিবেদন : বিজেপি বলছে আর চাকরি হারাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। অবশ্যই ভায়া আদালত। গদ্দার ও বিজেপির নেতা-নেত্রীরা আগে থেকেই বলে দিচ্ছে কবে, কোন তারিখে কত হাজার চাকরি যাবে। এখন এটাই নতুন ট্রেন্ড। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ নিয়ে তোপ দাগল তৃণমূল কংগ্রেস। সদ্য আদালতের এক রায়ে বাংলার কয়েক হাজার যোগ্য ছেলেমেয়ের চাকরি গেল। অযোগ্যদের সঙ্গে চাকরি গেল যোগ্যদেরও। এটা কোন ধরনের সুবিচার করল আদালত? বাংলার ছেলেমেয়েদের চাকরি যাওয়ার রায় শুনে বিজেপি নেতারা পৈশাচিক উল্লাস করছে। সঙ্গে গলা মেলাচ্ছে কংগ্রেস আর সিপিএম। রায় বের হওয়ার আগে বিরোধী নেতা বলছেন, বোমা বিস্ফোরণ হবে। তারপরই আদালত ২৬ হাজার চাকরি যাওয়ার রায় দিচ্ছে। আবার এক বিজেপি বিধায়ক হুঙ্কার দিয়েছেন সামনের ৩০ তারিখে ফের ৫৯ হাজার চাকরি যাবে। তবে কি এই দুয়ের মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে? বিজেপির কথাতেই কি রায় লেখা হচ্ছে? তাঁদের মধ্যে যোগযোগ আছে কিনা তা নিয়ে এবার সিবিআই তদন্ত হোক। বৃহস্পতিবার এই দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এই দাবি তোলেন। সেই সঙ্গে তাঁরা পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন সুপার নিউমেরিক পোস্টে সরকার এখনও পর্যন্ত কোনও নিয়োগ করেনি। এই পোস্ট নিয়ে প্রাথমিক ভাবে আদালতও কোনও প্রশ্ন তোলেনি।
আরও পড়ুন-অযোগ্যদের তালিকা দেওয়া হয়েছে কোর্টে, যা হচ্ছে মিথ্যাচার : এসএসসি চেয়ারম্যান
এদিন কুণাল বলেন, বিজেপি বলে দিচ্ছে তারপর কোর্টের রায় হচ্ছে। বিজেপি আগাম বলছে বিস্ফোরণ, তারপর কোর্টের রায়ে চাকরি যাচ্ছে। আবার বিজেপি বিধায়ক বলছে কোর্টের আরও একটা রায় আসছে। ফের চাকরি যাবে। ফলে পরিষ্কার, সবটাই কোথাও একটা একসূত্রে বাঁধা। তবে কি বিজেপির পার্টি অফিস থেকে টাইপ করে রায় আদালতে যাচ্ছে, নাকি আদালত যেখানে রায় লিখছে সেখানে বিজেপির লোকজন বসে আছে? তবে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার সবার আছে। আমাদের দাবি, এই দুয়ের মধ্যে কী যোগাযোগ আছে তা নিয়ে সিবিআই তদন্ত করুক।
যাঁদের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন, যাঁদের চাকরি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, হোক। তাঁদের তালিকা আদালতে দিয়েছে এসএসসি। কিন্তু যাঁদের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন নেই, তাঁরা তো যোগ্য। তাঁদের চাকরি খাওয়াটা কীভাবে ন্যায়বিচার হল? আর তাঁদের চাকরি যাওয়া নিয়ে ভোটের বাজারে পৈশাচিক উল্লাস করছে বিজেপি। আর তাঁদের দোসর হয়েছে কংগ্রেস আর সিপিএম। মোদি সরকার তো আর কাউকে চাকরি দেয়নি। উল্টে বেকার বেড়েছে। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু ভোটের বাজারে বিরোধীরা তা আটকাতে চাইছে। নিয়োগ নিয়ে কিছু ভুল হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। যাঁরা চাকরি পেয়েছে তাঁদের মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ অযোগ্য। তবে কেন সবার চাকরি গেল? যোগ্যদের পাশে সরকার ছিল আছে থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর হস্তক্ষেপে তাঁদের চাকরি দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু এরই মধ্যে এভাবে সবার চাকরি যাওয়াটা কীভাবে ন্যায়বিচার হল সেই প্রশ্নই এখন তুলছে তৃণমূল।