আর্থিকা দত্ত, জলপাইগুড়ি: বিজেপির হালখাতা এবার শূন্য হয়ে যাবে। ওরা মানুষের পকেট খালি করেছে। মানুষই এবার ওদের খাতা শূন্য করে দেবে। ৪০০ তো দূর অস্ত, এবার ২০০-ও পেরবে না বিজেপি। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির প্রচার মঞ্চ থেকে বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, বিজেপি আর জিতবে না, রাজ্যে রাজ্যে জিতবে আঞ্চলিক দলগুলিই। বাংলায় জিতবে তৃণমূল। আর সেটা বুঝতে পারছে বলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে এত শাসানি, এত অপপ্রচার, এত অত্যাচার। সব কিছুর জবাব দিয়ে দেশের যুবসমাজই এবার নিপাত করবে বিজেপিকে।
আরও পড়ুন-১৬ মাসের শিশুকে আটকে ঘুরতে গেলেন মা, খাবার-জল না পেয়ে মৃত্যু একরত্তির
দেশকে বাঁচাও : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, তামিলনাড়ুতে স্ট্যালিনরা জিতবে, পাঞ্জাবে জিতবে অরবিন্দরা, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশের পার্টি জিতবে আর বাংলায় আমরাই জিতব। বিজেপি শূন্য পাবে।
এরপরই বাংলার তরুণ প্রজন্মের কাছে আবেদন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো ডাক দিলেন, তরুণ প্রজন্ম তোমরা জেগে ওঠো। দেশটাকে চেনো। বিজেপিকে হটিয়ে দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাও।
পকেটমারের দল : বিজেপি ইডি, সিবিআই, এনআইএ-র ভয় দেখাচ্ছে আর সব বিজেপিতে যাচ্ছে। ওরা আমাদের চোর বলছে, কিন্তু সবচেয়ে বড় চোর তো ওরাই। গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখেছে। ১০০ দিনের টাকা লুঠ করছে। পিএম কেয়ার ফান্ডের নামে টাকা লুঠ করছে।
আরও পড়ুন-ঔদ্ধত্য! বিজেপি জিতলে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি তফসিলি মহিলাকে
আমি মোদি-শাহ নই : তৃণমূল নেত্রীর কথায়, আমার গাড়ি দেখে ওরা চোর বলছে। মনে রাখবেন, আমি কারও পিতৃদেবের টাকায় এক কাপ চা-ও খাইনি। চাইলে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন, পেনশন নিতে পারতাম। কিন্তু আমার দরকার পড়ে না। আমার দরকার মানুষকে। মানুষই আমার সব। কী সাহস ওদের, আমাকে বলছে চোর! ওদের জিভ টেনে নিতে পারতাম। কিন্তু আমি তো নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ নই। ওঁরা বলতে পারেন বেছে বেছে জেলে পাঠাব। উল্টো ঝুলিয়ে সিধে করে দেব। কিন্তু আমি জিভ টেনে নিতে পারলেও সেটা করব না।
বিজেপিকে ভোট নয় : কেন আপনারা বিজেপিকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে দেন? ওরা বাংলার বিরোধী। ওরা দিল্লিতে গিয়ে টাকা বন্ধ করে দেয়। একশো দিনের টাকা দেয়নি, আবাসের টাকাও আটকে রেখেছে, অন্য সব প্রকল্পেও ওরা বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করছে। নেত্রী বলেন, একশো দিনের টাকা আমরা দিয়েছি। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে, তাঁরা সবাই বাংলার বাড়ির টাকা পাবেন। ১১ লক্ষ মানুষের আবাসন এই বছরেই করব। আপনারা শুধু বিজেপিকে হটান, ওদের একটাও ভোট দেবেন না।
আরও পড়ুন-প্রতারক বিজেপিকে ভোট নয়, এবার শুধু তৃণমূলকেই
সতর্ক থাকুন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বুধবার রামনবমীর দিন বিজেপি অশান্তি করতে পারে। সংখ্যালঘু ভাইয়েরা অশান্তি বাড়তে দেবেন না। কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। ওরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভিডিও বানাচ্ছে। একদম বিশ্বাস করবেন না। কারণ ওরা মিথ্যা কথা বলে।
দুর্গতদের পাশে : নির্বাচন কমিশন তাদের নিয়মে শিথিলতা না আনলেও জলপাইগুড়ির দুর্গত মানুষের পাশে থাকবে রাজ্য। দৃপ্ত কণ্ঠে আবারও ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিপর্যয় মোকাবিলার নিয়ম মেনেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা বাড়ি তৈরির জন্য ১,২০,০০০ টাকা করে পাবেন। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তরা চলতি বছরই বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় প্রথম কিস্তির টাকা পাবেন।
প্রশ্নের জবাব : এদিন জনতার উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি প্রশ্ন করছি, আপনাদের উত্তর দিতে হবে। বলুন, আমার মতো উত্তরবঙ্গে আগে কেউ এসেছে? নতুন জেলা আমরা তৈরি করেছি, মহকুমা করেছি, ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি, সার্কিট বেঞ্চ, মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মন্দির সব করেছি, মানুষের উন্নয়নকেই সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিয়েছি। প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দিল জনতা।