মহেশতলায় (Maheshtala) ধর্মীয় উসকানির ছবি তুলে ধরল ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। এক শ্রেণির ধর্মীয় মৌলবাদীদের উস্কানিতে রবীন্দ্র নগর থানা এলাকায় অশান্তি শুরু হওয়ার পরে পুলিশ বাহিনী এলাকা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালালে মৌলবাদীদের উসকানিতে অশান্তি বাড়ি। দুপক্ষেই ধর্মীয় মৌলবাদীদের উসকানি ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে, জানালেন পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী। রাতে বজবজ এলাকা থেকে বোমার মশলাসহ গ্রেফতার আরএসএস কর্মী। সেই সঙ্গে ধর্মীয়স্থানে আঘাতে দোষীদেরও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতারির আশ্বাস পুলিশের। রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় জারি ১৬৩ ধারা।
বুধবার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার মহেশতলা এলাকা দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে। সেই ঘটনায় ডায়মন্ড হারবার পুলিশ ২৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ইতিমধ্যে। কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার ১২ জন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী জানান, বেলা ১২টা-সাড়ে ১২টা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। রবীন্দ্র নগর থানা এলাকায় একটি বাসস্থানে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ঘিরে পরিস্থিতি অশান্ত হয়। সেখানে ক্রমশ ধর্মীয় উস্কানিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। দোকান ভাঙচুর, গাড়ি ভাঙচুর, পাথর ছোড়ার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ দায়েরের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান পুলিশ সুপার। আশ্বাস দেন সব অভিযোগের তদন্ত হবে।
পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, কোনও ধর্ম বা রাজনৈতিক দল না দেখে মহেশতলার অশান্তির ঘটনায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গোটা রবীন্দ্র নগর থানায় এলাকায় ১৬৩ বিএনএস, যা পূর্ববর্তী ১৪৪ ধারা, তা লাগু হওয়ার ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার। যার জেরে মহেশতলা পুরসভা এলাকার বড় অংশেও জারি ১৪৪ ধারা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই পুলিশ এলাকায় দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করে, জানান পুলিশ সুপার। সেই মোতাবেক রাত ৯টা নাগাদ বজবজ থানা এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণ বোমার মশলা ও মশলা পাচারে যুক্ত তিনটি বাইককে আটক করা হয়। উদ্ধার হয়েছে সোডিয়াম পাউডার, ফসফরাস পাউডার ইত্যাদি বিস্ফোরক আটক করা হয়। পাঁচজনকে পাচারে যুক্ত থাকায় আটক করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, আটকদের মধ্যে একজন নবীন রায়। যিনি সক্রিয় আরএসএস কর্মী। তাঁর বাড়ি রবীন্দ্রনগরে। এর আগে রামনবমীর দিন বাটা মোরে মিছিল ঘিরে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িত ছিলেন এই নবীন রায়। সেই ফুটেজও পুলিশের কাছে রয়েছে জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশের তরফে জানানো হয়, বোমার মশলা পাচারে ধৃতরা প্রাথমিক জেরায় স্বীকার করেছেন, মহেশতলা এলাকায় অশান্তির সঙ্গে এই বিস্ফোরকের যোগ রয়েছে। ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাদের পিছনে কারা রয়েছে অশান্তিতে মদত দেওয়ায়, তা খোঁজার কাজ চালানো হবে বলে জানানো হয়।
পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ বাসিন্দাদের দোকান ভাঙচুর, তুলসী মঞ্চ ভাঙচুরে জড়িত যারা তাদের চিহ্নিতকরণ চলছে। ডায়মন্ডহারবার পুলিশ নিজেদের এলাকার বাইরে গিয়েও দোষীদের গ্রেফতারের কাজ চালাচ্ছে। এলাকায় ১০ টি পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় যদি কোনও পুলিশ কর্মীর গাফিলতি প্রকাশ্যে আসে তবে সেখানেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয় আধিকারিকদের তরফে।