হরিয়ানায় নিট কেলেঙ্কারির নেপথ্যে বিজেপির যুবনেতা

নিটের ফলাফলেই প্রতিফলিত হয়েছে এই দুর্নীতি। মেডিক্যালে আসন পাইয়ে দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

Must read

প্রতিবেদন : নিট কেলেঙ্কারির নেপথ্যে যে আসলে গেরুয়া দলই তা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে দিনের আলোর মতোই। বিজেপির মদতে এই ভয়াবহ দুর্নীতির একটি নমুনা হরিয়ানার ঘটনা। খলনায়ক বিজেপির যুবনেতা শেখর যাদব৷ বিজেপি শাসিত হরিয়ানার বাহাদুরগড়ে হরদয়াল পাবলিক স্কুলে নিট পরীক্ষাকেন্দ্রে ধরা পড়েছে সুপরিকল্পিত অনিয়ম। নিটের ফলাফলেই প্রতিফলিত হয়েছে এই দুর্নীতি। মেডিক্যালে আসন পাইয়ে দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন-বিহারে কলেজের খাবারে মিলল সাপ

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, শুধুমাত্র এই কেন্দ্রেরই ৬ পরীক্ষার্থীর নাম উঠে এসেছে নিটের মেধাতালিকার শীর্ষে। প্রত্যেকেরই প্রাপ্ত নম্বর ৭২০-র মধ্যে ৭২০। বাকি দু’জন পেয়েছে মোট নম্বরের থেকে মাত্র এক ও দু’নম্বর কম। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, এ কীভাবে সম্ভব? এই ৮ পরীক্ষার্থী যে কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছে তার মালিক বিজেপিরই যুবনেতা শেখর যাদব। পরীক্ষাকেন্দ্রটির মালিকানাও নাকি তাঁরই। ১৪০ নম্বর পর্যন্ত গ্রেসমার্ক পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছেন তিনিই। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে শিক্ষামহলে। ব্যাপক ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অন্যান্য পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকরা। প্রতিবাদে পথে নেমেছেন তাঁরা। দাবি জানিয়েছেন নিরপেক্ষ তদন্তের।

আরও পড়ুন-ওড়িশার ‘মত্ত’ শিক্ষামন্ত্রীর ভিডিও ভাইরাল, অস্বস্তিতে বিজেপি

প্রশ্ন উঠেছে, হরিয়ানার একটিমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কীভাবে ৬ জন উঠে আসতে পারে মেধাতালিকার শীর্ষে? সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ৮ জন পরীক্ষার্থীরই রোল নম্বর একই সিরিজের। ৬২ থেকে ৬৯। পরীক্ষার্থীরা তো বটেই, পরীক্ষা-বিশেষজ্ঞরাও নিট পরীক্ষায় স্বছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সামাজিক মাধ্যমে। যেসব পরীক্ষার্থীদের তথাকথিত সাফল্য নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে সংশয়, তোলা হয়েছে প্রশ্ন তাঁদের নিটের রোল নম্বর, নাম, প্রাপ্ত নম্বরের স্ন্যাপশটও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। এই ধরনের ৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন আশ্চর্যজনকভাবে পেয়েছে মোট ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০ নম্বরই। বাকি দু’জন পেয়েছে যথাক্রমে ৭১৯ এবং ৭১৮ নম্বর। সন্দেহ এবং সংশয়টা আরও দৃঢ় হচ্ছে এই কারণেই। শাক দিয়ে মাছ ধরতে সবচেয়ে অদ্ভুত যুক্তি সাজিয়েছে পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা এনটিএ। কী সেই যুক্তি? পরীক্ষার্থীদের অনেকটা সময়ই নাকি নষ্ট হয়ে গিয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রে। সেই কারণে তাঁদের দেওয়া হয়েছে গ্রেসমার্ক। কিন্তু এই যুক্তি মানতে আদৌ রাজি নন অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। কোচিং সেন্টারের পরীক্ষার্থীদের দাবি, কতজনকে এবং কাকে কাকে এই গ্রেসমার্ক দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট করে জানানো হোক। কত গ্রেসমার্ক কেন দেওয়া হয়েছে তারও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হোক। সবচেয়ে বড় কথা এই গ্রেসমার্ক দেওয়ার ব্যাপারে কোনও বিজ্ঞপ্তিই দেয়নি এনটিএ। তাহলে আচমকা এই বিষয়টা এল কোথা থেকে? আর কোন সেন্টারে কত সময় কীভাবে নষ্ট হয়েছে পরীক্ষার্থীদের তারও বিস্তারিত তথ্য দাবি করেছেন ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা এবং তাঁদের অভিভাবকরা। একসঙ্গে ২ সেট প্রশ্নপত্রই বা কেন তুলে দেওয়া হল পরীক্ষার্থীদের হাতে, এর পিছনে ঠিক কী অভিসন্ধি ছিল তাও এখন চর্চার বড় বিষয়।সারাদেশে নিট ভয়াবহ নিট-কেলেঙ্কারির এ এক নমুনামাত্র। দ্রুতগতিতে বেআব্রু হচ্ছে বিজেপির মদতপুষ্ট দুর্নীতি।

Latest article