বিদ্বেষের বিষে ভরা বিজেপির ধর্মের নামে বজ্জাতি

বিজেপি বিদ্বেষের বিষে ভরা একটি দল। ক্ষমতায় এসে দেশজুড়ে শুধু ঘৃণার রাজনীতি কায়েম করে বেড়াচ্ছে তারা। ধর্মের নামে বজ্জাতি চালাচ্ছে দেশে।

Must read

প্রতিবেদন : বিজেপি বিদ্বেষের বিষে ভরা একটি দল। ক্ষমতায় এসে দেশজুড়ে শুধু ঘৃণার রাজনীতি কায়েম করে বেড়াচ্ছে তারা। ধর্মের নামে বজ্জাতি চালাচ্ছে দেশে। ওড়িশা থেকে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ থেকে মধ্যপ্রদেশ— ‘হিন্দুরাষ্ট্রে’র দোহাই দিয়ে আক্রমণ নামানো হয়েছে খ্রিস্টধর্মের বিশ্বাসের উপর। ওড়িশায় সান্তাক্লজের টুপি বিক্রিতে বাধা দিয়েছে একদল। দিল্লিতে সান্তা-টুপি পরা মহিলাদের হেনস্থা করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে চার্চে ফাদারের ঘাড় ধরে হুমকি দেওয়া হয়। মধ্যপ্রদেশে আরও ভয়ানক ঘটনা। এই বিজেপি-রাজ্যে ছাড় নেই দৃষ্টিহীনেরও! ‘ধর্মান্তরণে’র অভিযোগে দৃষ্টিহীন মহিলাকে মারধর করেন বিজেপি নেত্রী। বিজেপির অন্য ধর্মের উপর আঘাত প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে তৃণমূল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল জানিয়ছে, বিজেপির শাসনে মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আজ পুরোপুরি ভূলুণ্ঠিত। মানুষের রুচি ও পছন্দের ওপর তালিবানি ফতোয়া জারি করা হচ্ছে। এটাই বিজেপির আসল রূপ। বিজেপি ও তাদের শরিকরা দেশকে মধ্যযুগীয় অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আজ টুপি আটকাচ্ছে, কাল হয়তো আপনাকে শ্বাস নিতেও বাধা দেবে। এদের এই ধর্ম বিরোধী মানসিকতা ও বিদ্বেষের রাজনীতিকে ধিক্কার।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

বিজেপি ব্রিগেডের ময়দানে গীতা পাঠের অনুষ্ঠানে চিকেন প্যাটিস বিক্রি করার ‘অপরাধে’ মারধর করেছিল আরামবাগের হকার শেখ রিয়াজুলকে। এবার বড়দিনের আগে সান্তাক্লজের টুপি বিক্রি করার দায়ে দরিদ্র বিক্রেতাদের যেভাবে হেনস্থা ও ভয় দেখানো হল তাতে নিন্দার ভাষা নেই। শুধু ওড়িশাতেও নয়, দিল্লিতেও সান্তা-টুপি পরা মহিলাদেরও শাসানি দেওয়া হয়েছে। কেন খ্রিস্টানদের টুপি পরে উৎসবে শামিল হওয়া, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মহিলাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, ফুটপাথে দাঁড়িয়ে সান্তা-টুপি বিক্রি করছেন কয়েকজন। তখন গাড়ি থেকে নেমে কিছু লোক ওড়িশাকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বলে উল্লেখ করে ‘খ্রিস্টানদের জিনিসপত্র’ বিক্রি করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। স্বঘোষিত হিন্দুত্ববাদীদের বলতে শোনা যায়, ‘এটা ভগবান জগন্নাথের দেশ। এখানে শুধু তাঁর শাসনই চলবে। হিন্দু হয়ে তোমরা এটা কীভাবে করছ? তাড়াতাড়ি সব গুটিয়ে এখান থেকে চলে যাও।’ এরপর আর একটি ভিডিও-তে দেখা যায়, দিল্লিতে সান্তা-টুপি পরে কিছু মহিলা সম্মিলিত হয়েছিলেন আনন্দ-অনুষ্ঠানে। তাঁদেরকে হটিয়ে দেওয়া সেই ক্ষেত্র থেকে। বলা হয় কেন সান্তাক্লজের টুপি পরে তাঁরা এখানে ভিড় জমিয়েছেন? এরপরই প্রশ্ন ওঠে, ভারতের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে সান্তাক্লজের টুপি বিক্রি করার জন্য দরিদ্র মানুষদের হেনস্থা কিংবা সান্তার টুপি পরার জন্য মহিলাদের শাসানি অসাংবিধানিক, অনৈতিক।
এরপর যে দুই ভিডিও সামনে আসে, তাতেও ছিল নৃশংসতা। উত্তরপ্রদেশে খ্রিস্টান ধর্মের এক ফাদারের ঘাড় ধরে হুমকি দেওয়ার হাড়হিম করা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতেও পিছপা হল না তথাকথিত হিন্দুধর্মের রক্ষকরা। সেই হুমকি যিনি দিচ্ছেন, তিনি বাংলাদেশের এক প্রাক্তন ব্লগার। বর্তমানে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ও ধর্ম প্রচারক। আর মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের জেলা সহ-সভাপতি অঞ্জু ভার্গবের হাতে নির্মমভাবে প্রহৃত হলেন দৃষ্টিহীন মহিলা। ধর্মান্তরণের মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে বিজেপি নেত্রীর মারের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ধর্মান্তরণের অভিযোগে চার্চে চড়াও হন বজরং দলের কর্মীরা।

Latest article