প্রতিবেদন : কী বলা যেতে পারে একে, অশিক্ষা? নাকি জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর এ এক সুনিপুণ কৌশল? সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা, এমন অদ্ভুত বিভ্রান্তি মানুষের মনে গেঁথে দিতে চাইছেন একটি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীই। অশিক্ষিতের মতো কথাবার্তা বলে চলেছেন বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের উচ্চাশিক্ষামন্ত্রী। এবং নিজেকে পরিণত করেছেন হাসির খোরাকে। তাঁর দাবি, আমেরিকার আবিষ্কর্তা ক্রিস্টোফার কলম্বাস নন, এক ভারতীয় নাবিক— এ দাবি করেছেন মধ্যপ্রদেশের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিং পারমার।
আরও পড়ুন-বন্যা নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা নবান্নর, বণ্টন দায়িত্ব
রাজ্যের বরকতুল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে এ দাবি করেন তিনি। শুধু তা–ই নয়, তিনি বলেছেন, ভাস্কো দা গামা ভারতে আসার সমুদ্রপথও আবিষ্কার করেননি। সেটা করেছিলেন গুজরাতের একজন ব্যবসায়ী। তাঁর নাম ছিল চন্দন। চন্দনের জাহাজ ছিল ভাস্কো দা গামার চেয়েও বড়। চন্দনের জাহাজ অনুসরণ করেই ভারতে এসেছিলেন ভাস্কো দা গামা। অথচ ইতিহাস লেখা হল তাঁকে নিয়েই। প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির রমরমা কতটা ছিল, সেটাই ছিল বিজেপির এই উচ্চশিক্ষামন্ত্রীর ভাষণের প্রতিপাদ্য। তাঁর ভাষণের শ্রোতাদের মধ্যে ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রীর দাবি, ভুল ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, ১৪৯২ সালে কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন। অথচ তার কত আগে অষ্টম শতাব্দীতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পৌঁছেছিলেন আমেরিকায়। সান দিয়েগোতে তাঁরা বেশ কয়েকটা মন্দিরও তৈরি করেছিলেন। স্থানীয় জাদুঘর ও গ্রন্থাগারে সেই তথ্যাদি রয়েছে। পারমার এখানেই থামেননি। তিনি বলেছেন, দ্বাদশ শতাব্দীতে চিনের রাজধানী বেইজিংয়ের স্থপতিও ছিলেন একজন ভারতীয়। নাম বাল বাহু। তিনি ছিলেন নেপালের বাসিন্দা, যে দেশটি প্রাচীনকালে ভারতেরই ছিল। এ কথাও তিনি বলেন, হাজার হাজার বছর আগে ঋগ্বেদে লেখা হয়েছিল সূর্য স্থির থাকে, পৃথিবী ঘোরে তার চারপাশে। পৃথিবীর চারধারে ঘোরে চাঁদ। অথচ ইতিহাসে নাম হয়েছে কোপার্নিকাসের! মন্ত্রীর কথায়, এই ভুল ইতিহাস নতুন করে লেখার দায়িত্ব আমাদেরই। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস কত সমৃদ্ধ ছিল, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি কত উন্নত ছিল, তা প্রচার করা দরকার। হীনম্মন্যতা কাটিয়ে ভারতবাসীর গর্বিত হওয়া উচিত।