প্রতিবেদন : লজ্জা! ন্যক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী হল হাওড়া স্টেশন। অবাক কাণ্ড, সরকারি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিপর্বে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উদ্বাহু নৃত্য। উদ্বোধনের ৩ দিন আগেই মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশনে ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের কামরায় উঠে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলল বিজেপি। শুরু করে দিল রীতিমতো হাত তুলে নাচানাচি। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির নামে জয়ধ্বনি।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের রেশন জালিয়াতি, ক্ষোভ সর্বত্র, প্রতিবাদে তৃণমূল
হতবাক রেলের আধিকারিকরা, এমনকী আরপিএফের জওয়ানরাও এবং ঘরমুখী লাখো যাত্রী। সরকারি প্রকল্পের কৃতিত্ব দাবি করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের এই অসভ্যতায় যখন নিন্দায় মুখর সাধারণ মানুষ, ঠিক তখনই প্রশ্ন উঠেছে এই বন্দে ভারত ট্রেন চালু করার আসল উদ্দেশ্য নিয়ে। নামেই দ্রুততম ট্রেন। কিন্তু বাস্তবে মোটেই তা নয়। ট্রেন ছুটবে ঘোষিত গতির চেয়ে অনেক কম গতিতে। সময় নেবে শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতোই। অনেকটা সময়ই নষ্ট হবে দিনের। আসলে লোক ঠকিয়ে বিজেপির নির্বাচনী স্টান্ট ছাড়া এটা আর কিছুই নয়। মতামত সাধারণ মানুষের। সবচেয়ে বড় কথা, এই নিয়ে কৃতিত্ব দাবি করার মতো কিছুই নেই প্রধানমন্ত্রীর। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে অজস্র দ্রুতগামী ট্রেনের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন। ভারতীয় রেলকে তিনি দিয়েছিলেন বিশেষ মাত্রা।
আরও পড়ুন-ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা মুর্শিদাবাদে, হতাহতের খবর নেই
মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশনে বিজেপির লোকেরা যে এমন অসভ্যতা করতে পারেন, তা সম্ভবত কল্পনাও করতে পারেননি কেউই। বিকেলে হাওড়া স্টেশন চত্বরে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। আচমকাই এই গেরুয়া তাণ্ডবে এবং চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্বাভাবিকভাবেই হতচকিত ঘরমুখী মানুষ। সাময়িক হকচকানি কাটিয়ে শেষপর্যন্ত অবশ্য বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ট্রেন থেকে টেনে নামিয়ে দেয় আরপিএফই। কিন্তু এই লজ্জাজনক ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিল, এই কি তা হলে বিজেপির নৈতিকতা? এই কি দলীয় শৃঙ্খলার নমুনা? রেলের প্রকল্পকে সামনে রেখে দলের কর্মীদের এই ধরনের ঔদ্ধত্য দেখানোর অধিকার কে দিল?
আরও পড়ুন-বিশ্বাসই হচ্ছে না আমি এক নম্বর ব্যাটসম্যান: সূর্য
শুক্রবার হাওড়া-এনজেপি ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে মঙ্গলবার বিকেলে হাওড়া স্টেশনের ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনটিকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দেখানোর ব্যবস্থা করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ছাড়া ট্রেনের মধ্যে অন্য কারও ওঠা নিষিদ্ধ ছিল। আরপিএফের কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ছিল ট্রেনটি। কিন্তু সকলের চোখ এড়িয়ে কীভাবে বিজেপির লোকজন এমন কাণ্ড ঘটালেন প্রশ্নটা সেখানেই।