প্রতিবেদন : সীমা ছাড়িয়েছে বিজেপির গুন্ডাগিরি। দিল্লিতে মাত্র ৩ মাস হল ক্ষমতায় এসেছে গেরুয়া শিবির। এরই মধ্যে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে তারা। এবার চিত্তরঞ্জন পার্কের মাছের বাজার বন্ধ করার খেলায় নামল বিজেপি। ধর্মের দোহাই দিয়ে চিত্তরঞ্জন পার্কের ৬০ বছরের পুরনো মাছের বাজার বন্ধ করার ফতোয়া দিল বিজেপির গুন্ডাবাহিনী। রীতিমতো হুমকি দিয়ে তারা বলেছে, হনুমান মন্দিরের পাশে চলবে না মাছ-মাংস বিক্রি। আতঙ্কে বসতে পারছেন না মাছ বিক্রেতারা। একই অবস্থা মাংসের দোকানগুলোরও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রায় ১০ দিন হল ওই এলাকার সব মাছবাজার এবং মাংসের দোকান কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে। বাঙালি-অধ্যুষিত এই এলাকায় মাছ-মাংসের বিকিকিনি কেন্দ্রের উপর কোপ পড়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। জানিয়েছেন প্রতিবাদ। বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দিল্লি পুলিশের নীরবতায়। প্রশ্ন তুলেছেন, অমিত শাহর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। বিজেপির এই স্বেচ্ছাচার রুখতে মহুয়ার সাহায্য চেয়েছেন স্থানীয় বাঙালিরা। সামাজিক মাধ্যমে মহুয়ার কটাক্ষ, দিল্লিতে বিজেপি সরকারের ৩ মাস পূর্তির সেরা উপহার। চিত্তরঞ্জন পার্কের যে মন্দিরটি, বিজেপির গুন্ডারা দাবি করেছে সেটি না কি নিরামিষাশীদের তৈরি। তাঁরা ওখানে উপাসনা করেন— বড় পুজো হয় ওখানে। মহুয়ার প্রশ্ন, তবে কি সেখানে ধোকলা খেতেই বাধ্য থাকবেন স্থানীয় মানুষ?
আরও পড়ুন-স্বচ্ছতা আনতে জিপিএস প্রযুক্তি
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, সি আর পার্কের দক্ষিণা কালীবাড়ির পুরোহিত সঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই মাছবাজার প্রথম থেকেই চলে আসছে। ডিডিএ-র অনুমতি রয়েছে। বাঙালি সনাতনীদের পুজোর সঙ্গে মাছের কোনও বিরোধ নেই। বাঙালির অন্নপ্রাশন থেকে বিয়ে, সব অনুষ্ঠানে মাছের ব্যবহার রয়েছে। এখনও পর্যন্ত আমার কাছে মাছের বাজার নিয়ে কেউ আপত্তি জানাননি। মাছের বাজার যদি বন্ধ করার দাবি ওঠে, তাহলে মন্দিরের বাইরে যে হুক্কা-বার চলে তা কেন বন্ধ হচ্ছে না, প্রশ্ন তোলেন তিনি। সেই সঙ্গে পুরোহিত সঞ্জীব জানান, মাছবাজার বন্ধ হলে অনেক মানুষ বেকার হবেন।
অদ্ভুত দাবি গেরুয়া গুন্ডাদের। হনুমান মন্দিরের পাশে মাছ-মাংসের বাজার চলবে না। দিল্লির ক্ষমতায় আসার পরে ধর্মীয় রাজনীতিতে মত্ত বিজেপি। অন্যান্য বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে যেভাবে হিন্দুত্বের তাস খেলতে সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারে লাগাম টেনেছে সেখানকার বিজেপি প্রশাসন, এবার রাজধানী দিল্লিতেও সেই একইরকম তাণ্ডব। সেই বিভেদের রাজনীতি।