প্রতিবেদন : পহেলগাঁও-কাণ্ডের পর যখন দেশের প্রয়োজন তখন রাজনৈতিক বিতর্ক দূরে সরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদীয় দলের প্রতিনিধি হিসেবে বিদেশ যাচ্ছেন। সেই আবহে ফের মিথ্যে ও বিকৃত তথ্য নিয়ে বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি। রাজ্য সরকারের একাধিক পদক্ষেপে ও তৎপরতায় মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণে তখন একটি রিপোর্টকে হাতিয়ার করে ফের মিথ্যা, অপপ্রচার, কুৎসা ও বিদ্বেষমূলক প্ররোচনা ছড়াচ্ছে বিজেপি। এতেই প্রমাণিত, দেশ তাদের কাছে বড় কথা নয়, বৃহত্তর সমাজ তাদের কাছে বড় কথা নয়, তাদের কাছে বিদ্বেষমূলক রাজনীতি, প্ররোচনামূলক রাজনীতি, সংকীর্ণ রাজনীতি, কুৎসামূলক রাজনীতি, বাংলার প্রতি বিদ্বেষ, বাংলার প্রতি প্রতিহিংসা— এগুলোই বিজেপি নেতাদের অগ্রাধিকার। বিজেপি নেতাদের এই আচরণের তীব্র বিরোধিতা করল তৃণমূল কংগ্রেস।
বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির এই মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেন দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য প্রশাসন মুর্শিদাবাদে শান্তি ফেরাতে কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তাও বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করেন কুণাল। তিনি বলেন— ১. ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। এরমধ্যেই তিনশোরও বেশি গ্রেফতার হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একশো জনেরও বেশি গ্রেফতার হয়েছে। ধরপাকড় এখনও জারি আছে। কোনও অপরাধীকে রেয়াত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুলিশ, প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে সবরকম অভিযান চালাচ্ছে। এর মধ্যে শোনা যাচ্ছে— কোথাও কোথাও ব্যক্তিগত শত্রুতা, কোথাও জমি-বাড়ি নিয়েও লড়াই হয়েছে। যার সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই।
২. মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্য সরকার, প্রশাসন সর্বতোভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে নিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। যাঁদের দোকানের ক্ষতি হয়েছে তাঁদের পাশেও দাঁড়িয়েছে প্রশাসন। অর্থাৎ এই অবাঞ্ছিত ঘটনায় যাঁদের জীবনগত, শরীরগত ও সম্পত্তিগত ক্ষতি হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার, পুলিশ ও প্রশাসন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
৩. এই ঘটনার পর একাধিক প্রেক্ষিত থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে, এর পিছনে একটা বৃহত্তর চক্রান্ত ছিল। বাংলাদেশ সীমান্তের ওপার থেকে হামলাবাজেরা এসেছিল কিনা, অন্য জায়গা থেকে বহিরাগতরা ঢুকেছিল কিনা তার ইঙ্গিত অনেকটাই স্পষ্ট। তার ওপর দাঁড়িয়ে তদন্ত চলছে। একটা নির্দিষ্ট দৃশ্যপট তৈরি করার জন্য, একটা নির্দিষ্ট চিত্রনাট্যে, পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
৪. এই ঘটনা যখন ঘটছে, তখন দেখা গেল মিথ্যে প্রচার, উসকানিমূলক পোস্ট, অন্য জায়গার ছবি ব্যবহার করে, অন্য ঘটনাকে পোস্ট করে তা মুর্শিদাবাদের ঘটনা বলে চালিয়ে উত্তেজনা তৈরি করার চেষ্টা করল বিজেপি ও তাদের নেতারা। আর পুলিশ-প্রশাসন অপরাধীদের ধরা ও এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিকৃত প্রচারকে থামানো ও সঠিক তথ্য প্রচার করার কাজটাও দায়িত্বের সঙ্গে করে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- ছত্তিশগড়ে খতম শীর্ষ মাওবাদী নেতা-সহ ২৭