পরিস্থিতি অশান্ত করাই শুধু নয়, এলাকায় গিয়ে ধর্মীয় উস্কানি দিচ্ছে বিজেপি। এমনকী, কর্তব্যরত শিখ পুলিশ আধিকারিককে ‘খালিস্তানি‘ বলে অপমান করতেও পিছুপা হলেন না বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাঙ্গপাঙ্গরা। সন্দেশেখালি যাওয়ার পথে শুভেন্দুদের আইনানুগ ভাবে আটকানোয় পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক আইপিএস জসপ্রীত সিং-কে ‘খালিস্তানি‘ বলে দেগে দেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে পোস্ট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাংলায় সম্প্রীতি নষ্টে চেষ্টা হলে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
আরও পড়ুন- কিংবদন্তি গায়িকা অসীমা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) লেখেন, “আজ, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি নির্লজ্জভাবে সাংবিধানিক সীমানা অতিক্রম করেছে। বিজেপির মতে, পাগড়ি পরা প্রত্যেক ব্যক্তিই খালিস্তানি।
আমি আমাদের শিখ ভাই-বোনদের ত্যাগ এবং অটল সংকল্পের জন্য সম্মানের বদলে তাঁদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার এই নির্লজ্জ ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা বাংলার সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় অবিচল এবং এটি ব্যাহত করার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিরোধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।“
কলকাতা হাইকোর্টের রায় মেনে, মঙ্গলবার সন্দেশখালি রওনা দেন শুভেন্দু। কিন্তু ধামাখালিতে তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। জানানো হয়, সোমবারের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে রাজ্য। সেই সময় পুলিশ অফিসার জসপ্রীত সিংয়ের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। আর তখনই সেই শিখ আইপিএস অফিসারকে ‘খালিস্তানি‘ জঙ্গি বলে অপমান করেন শুভেন্দুর সঙ্গীরা। সেই সময় তাঁদের আটকানোর কোনও চেষ্টা করতে দেখায় যায়নি শুভেন্দু অধিকারীকে। ফের সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকদের এভাবে ধর্মের নামে হেয় করার তীব্র নিন্দা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো-সহ শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি তুলোধনা করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কর্তব্যরত ইউনিফর্মে থাকা পুলিশ অফিসারকে কেন ধর্ম তুলে তিরস্কার করা হবে! জসপ্রীত সিং নিজের ওখানে বলেছেন, আমার মাথায় পাগড়ি আছে বলে আপনি আমায় খালিস্তানি বলছেন? আপনি এটা বলতে পারেন না। পুলিশ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে কুণাল বলেন, তখনই বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করতে হতো। কিন্তু পুলিশ সংযত ভূমিকা নিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে। ওই অফিসার অত্যন্ত সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছেন। এরপরেই তোপ দেগে কুণাল বলেন, বিজেপি কাজই হল, কোথাও গিয়ে ধর্মের ভিত্তি মানুষএর মধ্যে বিভাজন করে অশান্তি সৃষ্টি করা।