প্রতিবেদন: গত সপ্তাহে আমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর তদন্তে এবার তদন্তের স্বার্থে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্ল্যাকবক্সটিকে (Black Box) আমেরিকায় পাঠানো হচ্ছে।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত এআই ১৭১-এর ব্ল্যাকবক্স (ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার) বিশ্লেষণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে। ব্ল্যাকবক্সটি বিমানে আগুন লাগার কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই মুহূর্তে ভারতে এমন কোনও প্রযুক্তি নেই যা এত ক্ষতিগ্রস্ত ব্ল্যাকবক্স থেকে তথ্য উদ্ধার করতে সক্ষম। ফলে ব্ল্যাকবক্সটি ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)-এর পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। মার্কিন প্রযুক্তিবিদদের বিশ্লেষণের পর প্রাপ্ত রিপোর্ট ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (এএআইবি) সঙ্গে ভাগ করা হবে। এই ব্যুরো আমেদাবাদের ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্ত পরিচালনা করছে। জানা যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্ল্যাকবক্স থেকে তথ্য বের করতে কয়েকদিন থেকে শুরু করে কয়েকমাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এটি নির্ভর করছে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রার ওপর। গত সপ্তাহে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইটটি ছিল বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার। টেক অফের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এটি আমেদাবাদের বিজে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাস ভবনে আছড়ে পড়ে। দুর্ঘটনায় বিমানের ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রু-সহ মোট ২৭৪ জন এবং নিচে থাকা আরও দুই ডজনের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে স্থানীয় তাপমাত্রা তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। এমন চরম উত্তাপ সম্ভবত ব্ল্যাকবক্সের অতিরিক্ত ক্ষতির কারণ। দুর্ঘটনার দু’দিন পর ভারতের এএআইবির তদন্তকারী দল বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) ও ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার (এফডিআর) উদ্ধার করে। এই দুটি রেকর্ডার মিলে ‘ব্ল্যাকবক্স’ (Black Box) নামে পরিচিত। সিভিআর বিমানের ককপিটের ভেতরে পাইলটদের কথোপকথন-সহ বিভিন্ন শব্দ রেকর্ড করে, আর এফডিআর বিমানের প্রযুক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে। ব্ল্যাকবক্স ডিকোড করা তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমেই দুর্ঘটনার আসল কারণ এবং ঘটনার আগের মুহূর্তগুলির বিশ্লেষণ সম্ভব হবে। যদিও চূড়ান্ত তথ্য রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত নয়, তবুও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ‘ডুয়াল ইঞ্জিন ফেলিওর’ বা দুটি ইঞ্জিন একযোগে অচল হওয়ার তত্ত্ব সামনে এনেছেন।
বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে এএআইবির হাতে তিনমাস সময় রয়েছে, তবে ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণ যত দ্রুত সম্পন্ন হবে, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে দেশবাসী তত দ্রুত জানতে পারবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই তদন্তে স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাতে কোথাও কোনও ফাঁক বা অসংগতি না থাকে।
আরও পড়ুন-খামেনেইকে হত্যাই লক্ষ্য: ইজরায়েল